গাড়ি থামলে দৌড়ে যাচ্ছেন, পাচ্ছেন না ক্রেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৭ পিএম, ২৩ মে ২০২০

ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানেই খুশি। এ আনন্দে অনিবার্য অনুষঙ্গ সেলামি। আর সেলামি হিসেবে ঝকঝকে নতুন নোট পেলে উচ্ছ্বসিত হয় সব বয়সের মানুষই। কিন্তু প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সব কিছু বিলীন করে দিয়েছে। এবার নতুন নোট বি‌নিময়ের জন্য ব্যাংকগুলোতে ভিড় ছিল না। ব্যাংকের বাইরে অস্থায়ী নোট বিক্রেতারাও খুঁজে পাচ্ছে না সেলামিদাতাদের। ফলে মন্দা যাচ্ছে ব্যবসা।

শনিবার (২৩ মে) রাজধানীর মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংক ও সেনাকল্যাণ ভবনের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিবারের মত এবারও নতুন টাকার পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। টুল নিয়ে বসে আবার কেউ দাঁড়িয়ে বিক্রি করছেন টাকা। আইন অনুযায়ী বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও তারা বসেছেন। তবে এখানে যারা ব্যবসা করেন তারা সবাই নিম্ন আয়ের লোক; নোট বিক্রির এ আয়েই চলে তাদের সংসার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে সারা বছর নতুন পুরোনো ব্যবসায়ীসহ নারী-পুরুষ মিলিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জন নোট বিক্রি করেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় নতুন টাকা সংগ্রহ করেন তারা। কিন্তু করোনার কারণে নতুন নোটের ব্যবসা কমে গেছে।

note

প্রতিবার ঈদে নতুন নোটের জমজমাট ব্যবসা হলেও এবার করোনার কারণে ব্যবসায় মন্দা। রাস্তায় মানুষ কম। দু-একজন যাও আসছেন আগের মতো কেউ নতুন টাকা নিতে চাচ্ছে না। ফলে ব্যবসা খারাপ। এমন অবস্থা আগে কখনো হয়নি বলে জানান নতুন নোট বিক্রেতারা।

এদিকে সেনা কল্যাণ ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন নারী ও পুরুষ টুল নিয়ে বসে আবার কেউ দাঁড়িয়ে নতুন নোট বিক্রি করছেন। যেকোনো গাড়ি এসে থামলে দৌড়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন একাধিক বিক্রেতা। ক্রেতা পাওয়ার জন্য এক ধরনের প্রতিযোগিতা চলছে তাদের মধ্যে।

রাশিদা বেগম নামেরর এক নোট বিক্রেতা বলেন, আগে ঈদের সময় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বেচা-কেনা চলতো। চাঁদ রাত পর্যন্ত বিক্রি করতাম। এবার একটা কাস্টমারও নেই। করোনার কারণে মানুষ নতুন টাকা নিতে চায় না। লোকই নাই। দুপুর হয়ে গেছে একটি বান্ডিলও বিক্রি করতে পারিনি।

note

তিনি বলেন, নতুন নোট বিক্রি করে যে আয় হয় ওই টাকায় চলে সংসার। গত দুই মাস কোনো আয় নেই। ঈদ তো পরের কথা ঘরে ভাতই তো নেই। আমাদের কে খাওয়াবে? বসে আছি কিছু আয় হলে এক বেলা ভাত তো জুটবে।

এদিকে করোনায় নতুন নোটের বিনিময় ও বিক্রি কম হলেও নগদ লেনদেনের জন্য ব্যাংকগুলোতে টাকার চাহিদা বেড়েছে। এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাজার থেকে পুরোনো টাকা তুলে নিয়ে নতুন করে ৩০ হাজার কোটি নতুন টাকা সরবরাহ করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে প্রথমে ২৫ হাজার কোটি টাকার নোট সরবরাহ করার কথা ছিল, যা ইতিমধ্যে বাজারে সরবরাহ করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এসআই/এনএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।