ঈদে ঢাকা ফেরতদের নিয়ে আতঙ্কিত গ্রামবাসী, বিব্রত অনেকেই
করোনার হটস্পট ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ফেরা লোকজনকে নিয়ে আতঙ্কিত গ্রামবাসী। আবার কেউ কেউ বিব্রতও। ফলে ঈদ আনন্দের পরিবর্তে অনেকে ভীত হয়ে পড়েছেন। ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে গ্রামে যাওয়া অনেকের শরীরে করোনা সংক্রামণ দেখা দিয়েছে। জাগো নিউজের পক্ষ থেকে দেশের বেশ কয়েকটি জেলার বিভিন্ন পেশাজীবীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় সম্প্রতি ঢাকা ফেরত এক দম্পতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী এ তথ্য জানা যায়। উপজেলার মহেশমারী-কালমেঘ গ্রামের ওই দম্পতি দুজনই পোশাক কারখানায় কাজ করতেন এবং গত ২২ মে হেমায়েতপুর থেকে বাড়িতে এসেছেন।
নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়িতে যাওয়া সম্পর্কে জামালপুরের ফার্মাসিস্ট আতিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘শহর থেকে লোকজন গ্রামে আসায় আমরা আতঙ্কিত এবং হতাশ। ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জের লোকজন আক্রান্ত বেশি। সেখান থেকে যেসব লোক আসছে তারা হাট-বাজারে চলাফেরা করে। কার মধ্যে ভাইরাস আছে কেউ বুঝতে পারব না। তাই আমরা যদি তাদের সংস্পর্শে যাই, কিংবা সে যদি আমাদের সংস্পর্শে আসে- তাহলে অবশ্যই আমরা আক্রান্ত হবো। এ জন্য আমরা আতঙ্কে আছি। শহরের লোক শহরে থাকবে, গ্রামের লোক গ্রামে থাকবে- এ ব্যবস্থা থাকলে খুবই ভালো হতো। কিন্তু মানুষ বিষয়টা মানছে না। আর না মানার কারণে আমরা বিপদের পড়তে যাচ্ছি।’
দেশে সাধারণ ছুটি শুরুর পর থেকেই গ্রামেবাড়ি টাঙ্গাইলে অবস্থান করা তিতুমীর কলেজের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মো. মশিউর বলেন, ‘আমাদের জন্য সত্যিই এটা হতাশাজনক এবং খুবই বিপজ্জনক বিষয়। করোনার হটস্পট নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকা থেকে আসা ব্যক্তিরা ঝুঁকিপূর্ণ। তারা হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেন না। এমনকি মাস্ক, গ্লাভস ছাড়া অবাধে হাট-বাজার ঘোরাফেরা করছেন। তারা নিজেরাও ঝুঁকিতে আছেন এবং গ্রামে যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ছিল সেটাও অস্বাভাবিক করছেন।’
নেত্রকোনার সবজি বিক্রেতা মো. আজগর বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে ঢাকা থেকে যেভাবে লোক গ্রামে আসছে এটি অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তারা যেভাবে চলাফেরা করছে আগামী দিনগুলোতেও যদি এভাবে চলাফেরা করে- তাহলে দেশ ঝুঁকির মধ্যেই চলে যাবে।’
একই জেলার মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ আমিরুল মমিন বলেন, ‘ঢাকা ও ঢাকা থেকে মানুষ যেভাবে আসছে তা খুবই দুঃখজনক। একই গাড়িতে অনেকে মিলে আসছে। এভাবে আসার পরে তাদের পরিবারের সঙ্গে অবাধে মিশবে। এটা তাদের পরিবার এবং ছেলে-মেয়ের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া এলাকার বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে উঠাবসা করায় ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়বে।’
এইচএস/এএইচ/এমকেএইচ