ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন ফুল বিক্রেতা গুলেছা বিবি

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:৪৯ পিএম, ২৭ মে ২০২০

রাজধানীর শাহবাগের ‘শাহজালাল ফ্লাওয়ার শপ’ নামের ফুলের দোকানের মালিক মধ্যবয়সী গুলেছা বিবি। বহু বছর ধরে ফুল বিক্রি করে তিনি ছয় সদস্যের পরিবারের খরচ মেটানো ও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করিয়েছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের নির্দেশনা মেনে গত দুই মাসেরও বেশি সময় দোকান বন্ধ রেখেছেন তিনি।

সামান্য সঞ্চয় করা টাকায় সংসার চালিয়েছেন এতদিন। কিন্তু দুই মাসেরও বেশি সময় একটি টাকাও রোজগার না থাকায় সংসারে অভাব দেখা দিয়েছে। তাই সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই সাহস করে আজ (বুধবার) থেকে শাহবাগে দোকান খুলে বসেছেন। রাস্তাঘাটে জনগণের চলাচল কম থাকায় দুপুর পর্যন্ত বিক্রি নেই বলে জানান গুলেছা বিবি।

তিনি জানান, দুই মাস পর দোকান খুলছি। আশায় আছি যদি কিছু বেচাকেনা হয়। বেচাকেনা তো হয় না এখন। কিন্তু ফুল আনতে তো কষ্ট হয়।

Gulesa-3.jpg

গুলেছা বিবি বলেন, ‘সরকার তো ভালোর জন্যই লকডাউন দিছে, লকডাউন না দিলে তো আমরা গণহারে মরতাম। সরকার তো চেষ্টা করতেছে, আর কী করতে পারে।’

তিনি জানান, গত দুই মাস কোনোভাবে জমানো টাকায় সংসারের খরচ চালাতে পারলেও এখন ছেলেমেয়ে নিয়ে না খেয়ে মরার উপক্রম হয়েছে। এই ব্যবসা দিয়েই ছেলেমেয়েদের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করিয়েছেন তিনি।

গুলেছা বিবি বলেন, ‘কারও কাছে হাত পাততে পারুম না, কারও কাছে চাইতেও পারুম না, রাস্তায় দিলেও লইতে পারি না, কেউ সেধে দিলেও লইতে পারি না, তাইলে বাঁচমু কেমনে?’

Gulesa-3.jpg

বুধবার সকালে শাহবাগের ফুলের মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, গুলেছা বিবির মতো আরও কয়েকজন ফুলের দোকান খুলে বসেছেন। এক সময় সকালে শাহবাগের ফুলের বাজার জমজমাট থাকলেও এখন সেখানে সুনসান নীরবতা। জানা গেল, দুই মাস পর আজ সকালে পাইকারি মার্কেটে কিছু বেচাকেনা হয়েছে।

কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, দোকান না খুলে তারা আর সংসার চালাতে পারছেন না। তাই এখন ফুল ব্যবসায়ীদের অনেকের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান-পাট খুলতে শুরু করেছেন আবার কেউ কেউ আগামী দু-একদিনের মধ্যে দোকান খুলে বসবেন বলে জানান। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার বৈশাখ ও ঈদের ফুলের বাজারে বেচাকেনা ছিল শূন্যের কোঠায়।

এমইউ/এমএসএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।