হোম অফিসেই থাকছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো
সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও দেশে ব্যবসা করা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কর্মীরা আগের মতোই বাসায় থেকে অফিস (হোম অফিস) করবেন।
মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রেক্ষিতে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এ ছুটির মেয়াদ কয়েক দফায় বেড়ে দুই মাসের বেশি সময় পার আজ শেষ হচ্ছে। ফলে আগামীকাল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের কর্পোরেট অফিস খুলে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
তবে কর্মীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বহুজাতিক বেশিরভাগ কোম্পানি তাদের কর্পোরেট অফিস আপাতত না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা বাসায় থেকেই তাদের অফিশিয়াল কাজ করবেন।
এ বিষয়ে ইউনিলিভারের হেড অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স শামীমা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের একটা গ্লোবাল প্রটোকল আছে। গ্লোবাল প্রসেস মেনে আমরা সবার আগেই হোম অফিসে চলে গিয়েছিলাম। এখন আমরা আগের মতোই হোম অফিস করবো।
তিনি বলেন, আমাদের ফেরাটা হবে গ্লোবাল প্রসেসে। সরকার যখন লকডাউন খুলে দেবে তখন একটা সময় পর্যন্ত দেখা হবে। বেশ কিছু প্যারামিটার দেখা হবে, যেমন করোনা সংক্রমণ কমছে কিনা? গণপরিবহনে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে কিনা? হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কমছে কিনা? এরকম বেশ কিছু প্যারামিটার দেখার পরেই রেগুলার অফিসে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
তিনি আরও বলেন, করানো ভাইরাসের এই সংকটের কারণে আমাদের কোনো কর্মীর চাকরি যাবে না। আমরা আগেই কমিটমেন্ট করেছিলাম মার্কেটে আমাদের সেল থাকুক বা না থাকুক জুন পর্যন্ত আমাদের কর্মী এবং আমাদের সঙ্গে থার্ড পার্টি যারা আছে তাদের চাকরির কোনো সমস্যা হবে না। অবশ্যই জুনের পর এটা আমরা পুনর্মূল্যায়ন করবো। আমাদের মানুষজনের চাকরির ব্যবস্থা নিশ্চিত করাটাই প্রথম রেস্পন্সিবিলিটি থাকবে।
রেকিট বেনকিজারের কোম্পানি সচিব নাজমুল আরিফিন জাগো নিউজকে বলেন, আগের মতোই এখন আমরা হোম অফিসেই আছি। আমরা উৎপাদনে আছি। কারখানায় কার্যক্রম চলছে। সুতরাং যেখান থেকেই অফিস করি আমাদের অপারেশনের কোনো হ্যাম্পার হবে না। আমাদের সার্ভিসের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।
গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন মুহাম্মদ হাসান জাগো নিউজকে বলেন, আমরা এখনো পর্যন্ত হোম অফিসেই আছি। নিরাপত্তা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এমপ্লয়ী, যারা সরাসরি গ্রাহক সেবার সঙ্গে জড়িত নন- তাদেরকে বাসা থেকে অফিস করার জন্য উৎসাহিত করছি। সেই সঙ্গে যারা সরাসরি গ্রাহক সেবা দেবেন তাদের জন্য যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উৎসাহিত করছি। একই সঙ্গে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহক সেবা নিশ্চিতের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি যেন সরাসরি যোগাযোগ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা যায়।
লাফার্জহোলসিমের এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন ম্যানেজার তহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা এখনো আগের মতোই হোম অফিস করব। এখনো পর্যন্ত আমাদের কর্পোরেট অফিস খোলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
রবি আজিয়াটা লিমিটেডের কর্মী বলেন, করোনা ভাইরাস শুরুর পর বাসায় থেকেই অফিসের কাজ করছি। শারীরিক উপস্থিতির দরকার না হলে অফিসে যেতে হচ্ছে না। অফিসের মিটিং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হচ্ছে। যারা মার্কেটে কাজ করেন তাদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। এখনো আমাদের অবস্থান আগের মতোই রয়েছে।
বাটার শেয়ার বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, কর্পোরেট অফিস খেলার বিষয়ে এখনও আমরা অফিশিয়ালি কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি। তবে মুখে মুখে শুনেছে অফিস করা লাগতে পারে। সে ক্ষেত্রে শিফট ভাগ করে দেয়া হবে। অফিশিয়ালি সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কোনো কিছুই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
এমএএস/এএইচ/জেআইএম