করোনায় তিন শতাধিক মরদেহ দাফন করেছে কোয়ান্টাম

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৬ পিএম, ৩০ মে ২০২০

করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন এমন তিন শতাধিক মরদেহ দাফন ও সৎকার করেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। করোনা আতঙ্কে পরিবারের সদস্যরা যখন লাশ ফেলে পালিয়ে যাচ্ছেন বা ভয়ে দূরে থাকছেন, তখন মরদেহকে শেষ বিদায় জানাতে মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে এভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ফাউন্ডেশনটির স্বেচ্ছাসেবকরা।

শনিবার (৩০ মে) কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ‘কোভিড-১৯ স্বেচ্ছা দাফন কার্যক্রম’র সমন্বয়ক ছালেহ আহমেদের পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, কোয়ান্টামের চার শতাধিক নিবেদিতপ্রাণ স্বেচ্ছাসেবক দিনরাত ২৪ ঘণ্টা এ সেবাকাজে নিয়োজিত রয়েছেন।

বার্তায় ছালেহ আহমেদ বলেন, গত ৭ এপ্রিল থেকে আমরা দাফন কার্যক্রম শুরু করি। এ পর্যন্ত দেশব্যাপী আমরা ৩০৬টি মৃতদেহ দাফন ও সৎকার করেছি। এর মধ্যে ঢাকায় ২৩৫ জনের এবং রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বরিশাল, বগুড়া, সিলেট, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাকি ৭১ জনের মরদেহ দাফন ও সৎকার হয়েছে। রাজধানীর বাইরে সারাদেশকে ১৮টি জোনে ভাগ করে আমাদের এ কার্যক্রম চলছে। ধর্মীয় বিধান মেনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণ অনুযায়ী দাফন বা সৎকারের কাজ করে যাচ্ছি আমরা। শুধু মুসলিমই নয়; সনাতন ধর্মালম্বীদের জন্যও রয়েছে আমাদের বিশেষ দল। এছাড়া নারীদের দাফনে সহযোগিতা করছেন ২০ নারীর সমন্বয়ে গঠিত একটি দল।

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ সদস্য, আনসার সদস্য, সচিব, সাংবাদিক, ব্যাংকারসহ নানা পেশার মানুষকে কোয়ান্টাম দাফন ও সৎকার করেছে বলে উল্লেখ করা হয় বার্তায়।

jagonews24

ছালেহ আহমেদ বলেন, দিনরাত স্বেচ্ছাসেবার জন্যে প্রস্তুত থাকছেন কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবকরা, যারা ব্যক্তিজীবনে বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত, দিনে বা রাতে যে কোনো সময়ে ডাক পড়লেই তারা হাজির হয়ে যান হাসপাতাল বা মৃতের বাসা-বাড়িতে।

দাফন প্রক্রিয়ায় প্রায় ২৭ রকমের উপকরণ ব্যবহার করে কোয়ান্টাম। দাফন কাজে সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয় অ্যালকোহলসহ কয়েক ধরনের জীবাণুনাশক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী এ দাফন কার্যক্রম চলছে। কার্যক্রমের পুরো প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত পিপিই, মাস্ক, সেফটি গ্লাস, ফেস শিল্ড, সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লোভস, হেভি গ্লোভস, নেক কভার, মরদেহের কাফনের কাপড়, মরদেহ বহনের জন্য বিশেষ বডি ব্যাগসহ সুরক্ষার জন্য কয়েক ধরনের জীবাণুনাশক— পুরোটাই কোয়ান্টামের স্ব-অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।

ছালেহ আহমেদ বলেন করোনায় মারা গেলেও মৃতদের জানাজা পড়ানো হয় সাধারণ মরদেহের মতো যথাযথ সম্মানের সাথে। কবরস্থ করার পর মৃতের জন্য আন্তরিক দোয়া করা হয়। একজন মানুষ মারা গেলে পরিবারের লোক কাছে থাকবে না, আত্মীয়রা জানাজায় আসবে না- এটা আমাদের দেশের সংস্কৃতি নয়। করোনার এই সময়ে স্বজনহীন সেসব মৃতকে শেষ সম্মান জানানোর মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই এ সেবাকাজে নেমেছি। দেশের এই দুর্যোগে শেষ পর্যন্ত আমরা সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যেতে চাই।

এইচএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।