‘চাঁদাবাজি বন্ধ থাকায় কোনো রকম খেয়ে-পরে বেঁচে থাকছি’

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:৪৭ এএম, ০৮ জুন ২০২০

রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে উত্তরা-আব্দুল্লাহপুরগামী বিকাশ পরিবহনের বাসের তরুণ চালক রাসেল মিয়া গাড়ি বন্ধ করে বসে আছেন। বাইরে রাস্তায় জীবাণুনাশক স্যানিটাইজারের একটি বোতল হাতে দাঁড়িয়ে সহকারী উচ্চস্বরে ‘আসেন আসেন, এয়ারপোর্ট, উত্তরা-আব্দুল্লাহপুর’ বলে যাত্রীর খোঁজে ক্রমাগত ডাকছেন। কিন্তু যাত্রী দেখা নেই।

bus

বাসটিতে উঠে উঁকি মারতে বলতে গেলে পুরো বাস খালি দেখা গেল। মোট ৪২ আসনের বাসটিতে সর্বসাকুল্যে যাত্রীসংখ্যা পাঁচ-ছয়জন। যাত্রীদের সকলেই মুখে মাস্ক করে বসে আছেন।

bus

বাসচালক রাসেল মিয়া জানালেন, দুই মাস গণপরিবহন বন্ধ থাকার পর ১ জুন থেকে রাস্তায় বাস নিয়ে নেমেছেন। কিন্তু যাত্রী পাচ্ছেন না। প্রতিদিনই বলতে গেলে খালি বাস নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ফলে আয়-রোজগার খুবই কমে গেছে। আগের মতো প্রতিদিন হাজার টাকা চাঁদা গুনতে না হওয়ায় যৎসামান্য যা আয় হচ্ছে তা থেকে সব খরচ মিটিয়ে কোনোভাবে জীবন ধারণ করতে পারছেন বলে জানান।

bus

রোববার (৭ জুন) বিকেলে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বাসচালক রাসেল মিয়া এ কথা বলেন।

bus

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজিমপুর থেকে মিরপুর ও উত্তরাগামী রুটের বিভিন্ন বাস খুবই সীমিত যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবহনের জন্য এমনিতে বাসের মোট আসনের অর্ধেক সংখ্যক আসনে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা রয়েছে। পরিবহন মালিকরা যেন ক্ষতি পোষাতে পারেন সে জন্য ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে

bus

সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ৪২ আসনের একটি বাসে ২১ জন যাত্রী চলাচলের কথা। কিন্তু বর্তমানে খুব বড় জোর ১০/১২ জন যাত্রীর বেশি পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান বাসচালকরা।

bus

মিরপুর রুটে চলাচলকারী সেফটি পরিবহনের একজন চালক জানান, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রীদের অনেকে বাসে চড়তে ভয় পাচ্ছেন। স্কুল-কলেজসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আগের মতো যাত্রী নেই।

bus

তিনি হতাশার সুরে বলেন, মাস দুই আগেও বাসভর্তি যাত্রী থাকত। শুধু আসনই নয়, অনেকেই পাদানিতে দাঁড়িয়ে বাদুড়ঝোলা হয়ে গন্তব্যে যেত। কিন্তু এখন প্রতিটি বাস হাতেগোনা কয়েকজন যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে বাস চালানো কঠিন হয়ে যাবে।

স্বল্পসংখ্যক যাত্রী নিয়ে বাস চালিয়ে সব খরচ মিটিয়ে পোষাচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে একজন বাসচালক বলেন, আগে প্রতিদিন রাস্তায় এক হাজার টাকা চাঁদা গুনতে হতো। কিন্তু এখন সেই চাঁদা দিতে হচ্ছে না। ফলে স্বল্পসংখ্যক যাত্রী পেলেও কোনোভাবে পুষিয়ে নিতে হচ্ছে।

এমইউ/বিএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।