রেড জোনে ছুটি, সীমিত পরিসরে অফিসের নতুন প্রজ্ঞাপন আজ
অধিক করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমিত রেড জোনে সাধারণ ছুটি ঘোষণা এবং অন্যান্য স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে অফিস চালু ও গণপরিবহন চলাচল অব্যাহত রাখার নতুন প্রজ্ঞাপন জারি হবে আজ সোমবার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, করোনা প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি ঢাকায় ৪৫টি এলাকাকে ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বা রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করে তা লকডাউনের সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৮টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭টি এলাকা রয়েছে। রয়েছে চট্টগ্রামের ১০টি এলাকা। রেড জোন হিসেবে এই এলাকাগুলো চূড়ান্ত হতে পারে আজ।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসব এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে আদেশ জারি করবে।
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতিতে চলমান নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ। গত ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে সরকারি-বেসরকারি অফিস সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া হয়, চালু করা হয় গণপরিবহন।
আগামী ১৬ জুনে থেকেও এই ব্যবস্থা চলমান থাকবে। সরকার মূলত জোনভিত্তিক লকডাউনের মাধ্যমে করোনা মোকাবিলা পদ্ধতি গ্রহণ করেছে।
তবে নতুন করে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো এবং বিভিন্ন নির্দেশনা মেনে অফিস এবং গণপরিবহন চালু রাখার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে যে অবস্থায় চলছে সবকিছু সেভাবেই চলবে। নতুন করে ছুটি ঘোষণা করা হবে না। যে এলাকা রেড জোনে থাকবে, সেখানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হবে।
সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেশি করোনা আক্রান্ত এলাকাকে রেড, অপেক্ষাকৃত কম আক্রান্ত এলাকাকে ইয়োলো ও একেবারে কম আক্রান্ত বা আক্রান্ত মুক্ত এলাকাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। রেড জোনকে লকডাউন করা হবে, ইয়োলো জোনে যেন আর সংক্রমণ না বাড়ে সেই পদক্ষেপ নেয়া হবে। সতর্কতা থাকবে গ্রিন জোনেও। লকডাউনের মেয়াদ হবে ১৪ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত।
গত ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টা থেকে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকাকে পরীক্ষামূলকভাবে ‘রেড জোন’ হিসেবে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ১৪ দিনের জন্য এই লকডাউন কার্যকর করা হবে সেখানে।
গত মার্চ মাসের শুরুতে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী প্রথম ধরা পড়ে। পরিস্থিতি ক্রম অবনতির দিকে যেতে থাকলে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী গত ৩০ মে ছুটি শেষ হয়।
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কার মধ্যেই টানা ৬৬ দিনের ছুটি শেষে গত ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন নির্দেশনা মানা সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়। একই সঙ্গে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বন্ধ থাকা গণপরিবহনও (বাস, লঞ্চ, ট্রেন) চালু হয়।
রেড জোন ঘোষণা করা হতে পারে যেসব এলাকা
ঢাকা উত্তর সিটির গুলশান, বাড্ডা, ক্যান্টনমেন্ট, মহাখালী, তেজগাঁও, রামপুরা, আফতাবনগর, মগবাজার, এয়ারপোর্ট, বনশ্রী, রাজাবাজার, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, গুলশান, উত্তরা, মিরপুরকে রেড জোন হিসেবে ঘোষণার সুপারিশ করেছে জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি।
দক্ষিণ সিটির এলাকার মধ্যে আছে-যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, মুগদা, গেন্ডারিয়া, ধানমন্ডি, জিগাতলা, লালবাগ, আজিমপুর, বাসাবো, শান্তিনগর, পল্টন, কলাবাগান, রমনা, সূত্রাপুর, মালিবাগ, কোতোয়ালি, টিকাটুলি, মিটফোর্ড, শাহজাহানপুর, মতিঝিল, ওয়ারী, খিলগাঁও, পরিবাগ, কদমতলী, সিদ্ধেশ্বরী, লক্ষ্মীবাজার, এলিফ্যান্ট রোড, সেগুনবাগিচা।
চট্টগ্রাম সিটির রেড জোনের মধ্যে থাকতে পারে- চট্টগ্রাম বন্দরে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড, পতেঙ্গার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড, পাহাড়তলির ১০ নম্বর ওয়ার্ড, কোতোয়ালির ১৬, ২০, ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড, খুলশীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড, হালিশহর এলাকার ২৬ নম্বর ওয়ার্ড।
আরএমএম/এসআর/জেআইএম