শাহজাহানপুর হাটে দুপুর পর্যন্ত বিক্রি ১৫ গরু, হতাশ ব্যাপারীরা
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর শাহজাহানপুরে আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পশুর হাট শুরু হয়েছে। প্রথমদিন ক্রেতাদের সমাগম থাকলেও বেচা-বিক্রি নেই বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
ইজারাদাররা জানিয়েছেন, শনিবার হাট শুরুর প্রথমদিন সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত মাত্র ১৫টি গরু বিক্রি হয়েছে। অথচ দিনে তাদের অন্তত ৪০০ গরু বিক্রির টার্গেট ছিল।
বিক্রেতারা বলছেন, করোনার কারণে এবার হাট দেরিতে বসছে। চলবেও মাত্র চার দিন। তারা ভেবেছিলেন, হাট শুরুর দিন থেকেই ভালো বেচা-বিক্রি হবে। তবে প্রথমদিনের বেচাকেনায় তারা হতাশ।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, প্রথমদিন হওয়ায় তারা হাট ঘুরে দেখছেন। গরু পছন্দ হওয়ার বিষয় তো আছেই, সঙ্গে দর-দামে একদিনেও মেলানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রথমদিন হাটের পরিস্থিতি বুঝতে তারা ঘুরছেন বেশি।
হাটে আসা ক্রেতা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় গরুর দাম কিছুটা বেশি। প্রথমদিন হওয়ায় হাট ঘুরে দেখছি, দরদামও করছি। সবকিছুতে মিললে কিনব। না হলে আরেক দিন আসতে হবে।’
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে এবার গরুর খাবারের দামও বেশি। যারা দু-তিন দিন আগে থেকে গরু এনেছেন, তাদের গরুর খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
জামালপুর থেকে আসা খামারি সামাদ মিয়া বলেন, ‘গত বুধবার (১৪ জুলাই) ১০টি গরু নিয়ে ঢাকায় আসছি। এখনো একটাও বিক্রি হয়নি। আশা করছি, সোম-মঙ্গলবারের মধ্যে সবগুলো বিক্রি করতে পারব। এখন ক্রেতারা যারা আসছেন, দর-দাম করছেন; কিন্তু গরু কিনছেন কম।’
হাটের ইজাদারদেরর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত মাত্র ১৫টি গরু বিক্রি হয়েছে। তাদের প্রত্যাশা প্রতিদিন অন্তত ৩০০-৪০০ গরু বিক্রি হবে। তবে প্রথমদিন টার্গেট পূরণ হবে কি-না, তা নিয়ে সংশয়ে ইজারাদাররা।
তাদের তথ্যানুযায়ীম এবার হাটে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার হাজার গরু এনেছেন খামারি ও ব্যাপারীরা।
সিটি করপোরেশনের শর্ত উপেক্ষিত
এদিকে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় পশুর হাটে বেচা-কেনা ও প্রবেশের ক্ষেত্রে বেশকিছু শর্তজুড়ে দেয় সিটি করপোরেশন। হাট শুরুর প্রথমদিন ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রেতা ও ক্রেতাদের অধিকাংশই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। অধিকাংশ বিক্রেতা ও ক্রেতার মুখে মাস্ক নেই।
সিটি করপোরেশনের শর্তে বলা ছিল, একটি পশু কিনতে দুজনের বেশি ক্রেতা একসঙ্গে হাটে ঢুকতে পারবেন না। কিন্তু এ শর্ত কেউই মানছেন না। প্রবেশমুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান রাখা হয়নি। হাটে ঘোরাফেরা করা ক্রেতা ও বিক্রেতারা সামাজিক দূরত্বও মানছেন না।
হাটজুড়ে কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবীকে স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা দিতে দেখা যায়। হাটের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে মাইকিং করেও সচেতন করা হচ্ছে। তাতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কারও ভ্রূক্ষেপ নেই।
হাটের ইজারাদার আব্দুল লতিফ বলেন, ‘হাটে অনবরত মাইকিং করা হচ্ছে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান জানানো হচ্ছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবানও রাখা হয়েছিল। অধিকাংশ মানুষই তা মানতে চাইছে না। গ্রাম থেকে যারা গরু নিয়ে এসেছেন, তারা মাস্ক পরার ব্যাপারে একেবারে আগ্রহী নয়।’ তবুও ৮০ ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন বলে দাবি করেন এ ইজারাদার।
কেএইচ/এএএইচ/এমকেএইচ