জাদুঘরে প্রবেশে বিনামূল্যের টিকিট অনলাইনে, দুর্ভোগে দর্শনার্থীরা

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:০৬ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২২
অনলাইনে বিনামূল্যের টিকিট নেওয়ার চেষ্টায় দর্শনার্থীরা

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা। রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের ফটকের বাইরে চৈত্রের কাঠফাঁটা রোদে দাঁড়িয়ে এক নারী। সঙ্গে তার ব্যাংকার মেয়ে। মোবাইল চালাতে ব্যস্ত তিনি।

হঠাৎ ওই নারীকে বলতে শোনা যায়, ‘কিরে মা, অনলাইনে টিকিট কি আদৌ পাওয়া যাবে? কখন পাবি, আর ঘুরে দেখে কখন বাসায় ফিরবো?’

বিজ্ঞাপন

মায়ের এমন প্রশ্নে মেয়ের কণ্ঠে কিছুটা বিরক্তির সুর। তরুণী বলেন, ‘ই-মেইল ও পাসওয়ার্ড তো দিলাম। কাজ তো হচ্ছে না। একসঙ্গে অনেক মানুষ টিকিটের জন্য চেষ্টা করায় হয়তো সার্ভারে কাজ করছে না।’

এগিয়ে গিয়ে ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার মেয়ে ব্যাংক চাকরি করেন। তবে তারা থাকেন গ্রামে। তিনি এবং তার স্বামী মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। স্বাধীনতা দিবসে মেয়ের ছুটি থাকায় জাতীয় জাদুঘর ঘুরে দেখতে এসেছেন। কিন্তু অনেক সময় চেষ্টা করেও টিকিট কিনতে পারেননি। ফলে বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন তারা

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

jagonews24

তিনি বলেন, ‘শুনেছি, জাদুঘর ঘুরে দেখতে দেড়-দুই ঘণ্টা লাগবে। টিকিট পেতেই যদি দুপুর হয়ে যায়, তাহলে দেখবো কখন? অনলাইনের পাশাপাশি গেটেও টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, জাতীয় জাদুঘরের প্রবেশপথের সামনে সাইনবোর্ডে লেখা, ‘স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ জাতীয় জাদুঘর খোলা থাকবে। দিবসটি উপলক্ষে আগত সব দর্শনার্থীকে সৌজন্যমূলকভাবে বিনামূল্যে টিকিট দেওয়া হবে। তবে এ টিকিট পাওয়া যাবে শুধু অনলাইনে।’

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

জাদুঘরে প্রবেশপথে শামসুল নামের একজন আনসার সদস্যকে ঘিরে রেখেছেন বেশকিছু তরুণ-তরুণী। তাদের মোবাইল হাতে নিয়ে টিকিট নিয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। এছাড়া আশপাশে বিভিন্ন বয়সী নারী, পুরুষ এবং শিশুকে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। তারা প্রত্যেকেই মোবাইল হাতে অনলাইনে টিকিট পেতে ব্যস্ত।

jagonews24

লালবাগের একটি মাদরাসা থেকে জাদুঘর ঘুরে দেখতে এসেছেন দুজন ছাত্র। তাদের কাছে মোবাইল ফোন না থাকায় তারা নিরাপত্তারক্ষীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দিতে অনুরোধ করছেন। প্রয়োজনে তারা টাকা দিতেও রাজি। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষী তাতে রাজি হননি। নিরাপত্তারক্ষীরা ওই দুই ছাত্রসহ অনেককে সামনের পান-সিগারেট দোকানির কাছে গিয়ে টিকিট নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বিনামূল্যে টিকিটের ব্যবস্থা করলেও অনলাইনের যথাযথ প্রক্রিয়া না জানায় আশপাশ থেকে টাকা দিয়েই টিকিট সংগ্রহ করেছেন। জনপ্রতি ৩০ টাকা নিয়ে একটি গ্রুপ দর্শনার্থীদের টিকিট করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ জাদুঘরে প্রবেশের টিকিটের স্বাভাবিক মূল্য ২০ টাকা।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

রাজধানীর মিরপুর থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে আসা এক ব্যক্তি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি তো এখন স্বাভাবিক। কাউন্টারে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করতে কী সমস্যা? আজ যেহেতু বিনামূল্যে টিকিট, কাউন্টারে দিলেই পারতে কর্তৃপক্ষ। তাহলে এত ঝামেলা পোহাতে হতো না।’

এমইউ/এএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।