সর্বাধুনিক সুবিধা নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা
দুই হাজারের বেশি গাড়ি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন বিশাল পার্কিং লট, হেলিপ্যাড, সাউন্ড প্রুফ ইন্টেরিয়র ওয়াল, ওয়াই-ফাই সুবিধা, স্যাটেলাইট রি-ট্রিট সেন্টারসহ অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) যেকোন অনুষ্ঠান আয়োজনে এনে দিয়েছে নতুন মাত্রা। এ কনভেনশন সিটি নির্মিত হয়েছে ১৭৫ বিঘা জায়গার উপর, এতে রয়েছে পাঁচটি বড় হল আর একসঙ্গে ছয় হাজার মানুষের ধারণক্ষমতা। এসব সুযোগ-সুবিধার কারণে দর্শনার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আইসিসিবি।
বাংলাদেশে কনভেনশন সিটি তৈরির ভাবনা প্রথমবারের মতো এনেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। কুড়িল বিশ্বরোডের তিনশ ফিট সড়কের পূর্বাচল হাইওয়ে এক্সপ্রেসের পাশেই অবস্থিত দর্শনীয় এই কনভেনশন সিটি। বছরে ৩৬৫ দিনই অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যবস্থা রেখে পুরোদমে চলছে বুকিং কার্যক্রম। পাঁচটি হলেই প্রতিদিন চলছে বিয়ের রিসিপশন, কনফারেন্স, এজিএম, এক্সিবিশিনসহ নানা অনুষ্ঠান। টানা শিডিউলে সারাবছরই জমজমাট থাকে কনভেনশন সিটি।
কনসার্ট, মেলা, প্রদর্শনীসহ প্রতিবেশি দেশগুলোর বিভিন্ন উদ্যোক্তার জন্য আইসিসিবিতে বড় আকারের আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান আয়োজনেরও সুযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মোটর শো, থাই ও পাকিস্তানি ফেয়ার, ট্যুরিজম ফেয়ারসহ আরো বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানের মেলা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও প্রদর্শনী হয়েছে এখানে।
আইসিসিবির মার্কেটিং ও সেলস বিভাগের এক্সিকিউটিভ সানজিদা শারমিন খান জাগো নিউজকে বলেন, শুরু থেকেই অনেক সাড়া পাচ্ছি। পাঁচটি হলে প্রায় প্রতিদিনই ইভেন্ট হচ্ছে। নিয়মিত বুকিংয়ের জন্য আমরা ফোন পাচ্ছি। তবে হল খালি না থাকায় অনেককে বুকিং দিতে পারছি না।
এ বছরের জানুয়ারিতে বেশিরভাগ বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে কনভেনশন সিটির হলগুলোতে। ফেব্রুয়ারি আর মার্চে এজিএম, ফ্যাশন শো, এক্সপোর অনুষ্ঠানের বেশি বুকিং রয়েছে বলে জানান সানজিদা শারমিন খান।
২০১৫ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে বিশাল এই যাত্রা শুরু করে আইসিসিবি। নিজস্ব নিরাপত্তা টিমের পাশাপাশি পুরো কনভেনশন সিটি পর্যবেক্ষণ করা হয়ে সিসি টিভি ক্যামেরা দিয়ে। এছাড়াও রয়েছে স্ক্যানার, আর্চওয়ে। রয়েছে সর্বাধুনিক লজিস্টিক আর ক্যাটারিং সুবিধাও। কনভেনশন সিটিতে আসা গাড়িগুলোকে অটোমেটিক ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয় বলে গাড়ি পার্কিং নিয়ে অন্তত নিশ্চিত থাকতে হচ্ছে এখানে আসা দর্শনার্থীদের।
দর্শক সমাগমের দিক থেকে আইসিসিবি অত্যন্ত সুবিধাজনক স্থানে। যানজটের সমস্যা কম থাকায় দর্শনার্থীরা অতিসহজেই ভেন্যুটিতে আসতে পারছেন।
প্রায় সাড়ে ছয় লাখ স্কয়ারফিটের কনভেনশন সিটির প্রথম হলটির নাম ‘গুলনকশা’। ৩০ হাজার স্কয়ারফিটের হলটির ধারণক্ষমতা প্রায় ১২শ জন। একই আয়তন ও ধারণক্ষমতা নিয়ে চলছে হল-২ ‘পুষ্পগুচ্ছ’ এবং হল-৩ ‘রাজদর্শন’। হল-৪ ‘নবরাত্রি’ আসিসিবির সবচেয়ে বড় হল। এর ধারণক্ষমতা প্রায় দুই হাজার জন। প্রায় ২৫০ জন ধারণক্ষমতার হল-৫ এর নামকরণ করা হয়েছে ‘সেমিনার হল’ নামে।
সারাবছর অনুষ্ঠান আয়োজনের পাশাপাশি রোজার মাসেও বসে এখানে জমজমাট ইফতারবাজার। গতবছর প্রথমবারের মতো পুরান ঢাকার সুতি কাবাব, জালি কাবাব, টিক্কা কাবাব, কাচ্চি, মোরগ পোলাও, কোয়েলের রোস্ট, নান্না মিয়ার বিরিয়ানি ও বিউটি লাচ্ছির সমারোহ ছিল এই বাজারে।
ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সেবা খাতে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা।
এআর/এমজেড/এনএফ/এবিএস