প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও চমক দেখাতে চাই
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে আল মেহেদী তালুকদারকে সভাপতি আর আবুল বাসার সিদ্দিকীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। নবগঠিত কমিটির সম্পাদক আবুল বাসার ২০০৩ সালে ঢাবিতে ভর্তি হন। ভর্তি হওয়ার থেকেই বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দুইবার গ্রেফতার হন তিনি। দীর্ঘ ১২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করায় সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয় হয়েছে তাকে।
সম্প্রতি জাগো নিউজের মুখোমুখি হন তিনি। বলেছেন, ক্যাম্পাস নিয়ে তার স্বপ্ন ও নানা পরিকল্পনার কথা। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক মানিক মোহাম্মদ।
জাগো নিউজ : কেমন আছেন?
আবুল বাসার : আল্লাহর অশেষ কৃপায় ভালো আছি। আশা করি, আপনিও ভাল আছেন।
জাগো নিউজ : ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন, প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি কতটুকু?
আবুল বাসার : গত ১২ বছরের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে। দেশের সেরা বিদ্যাপীঠে ঐতিহ্যবাহী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছি। কমিটির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে যারা ছিলেন তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ। এজন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দলটির সিনিয়র সহ-সভাপতি তারেক রহমান এবং কমিটি গঠনে যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম হয়েছে তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
জাগো নিউজ : দায়িত্ব তো পেয়েছেন, এবার ক্যাম্পাস নিয়ে টার্গেট কি?
আবুল বাসার : দেখুন, দীর্ঘদিন ধরে ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের অনুপস্থিতির কারণে সরকার সমর্থিত প্রশাসন ও ছাত্রলীগ একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য অন্যায়ভাবে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছে। যৌক্তিক কোন ইস্যুতেও সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়নি। কেবলমাত্র ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে শত শত শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দিয়েছে। তবে আমি বলবো তাদের অত্যাচারে দেয়াল ভাঙ্গার জন্য শিগগিরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাবে ছাত্রদল। সহবস্থান নিশ্চিত করাসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিত দাবিগুলো আদায়ে ছাত্রদল পাশে থাকবে। ঢাবি ফিরে পাবে নতুন প্রাণ।
জাগো নিউজ : প্রশাসন থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসে প্রবেশে তো ছাত্রদলের জন্য নানা প্রতিকূলতা রয়েছে?
আবুল বাসার : সব প্রতিকূলতার অবসান শিগগিরই হবে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও চমক দেখাবো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ এতদিন অছাত্র বলে যে ঠুনকো অভিযোগ করে আসছে, এ কমিটির বিরুদ্ধে আর সে অভিযোগ করতে পারবে না। নিয়মিত ছাত্রদের হাতেই দায়িত্ব দিয়েছেন শীর্ষ কর্তারা। নিজেদের প্রাপ্য অধিকার ফিরে পেতে অবশ্যই ক্যাম্পাসে যাবো। এবং এটা যে কোন মূল্যেই হোক না কেন।
জাগো নিউজ : ছেলেদের সব হলে কমিটি গঠন করলেও বিজয় একাত্তর হলে কেন কমিটি করতে পারেননি?
আবুল বাসার : বিজয় একাত্তর হলটি নতুন। পুরাতন হলগুলোতে ছাত্রদলের কর্মীদের সঙ্গে যেভাবে যোগাযোগ ছিল নতুন হল হওয়ায় এই হলটির কর্মীদের সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ ও সমন্বয় করা হয়নি। তবে কমিটি হওয়ার পর থেকে অনেকেই যোগাযোগ করছেন। অনেকে নিয়মিত দেখাও করছেন। মেয়েদের হল ও অনুষদগুলোর কমিটির গঠনের সময় আমরা অবশ্যই বিজয় একাত্তর হলের কমিটি গঠন করবো।
জাগো নিউজ : ঢাবি শাখা ছাত্রদলের কমিটিতে ছাত্রলীগের অনেক নেতাকে পদ দেয়ার কথা শোনা যাচ্ছে?
আবুল বাসার : এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। ছাত্রদল দেউলিয়া হয়ে যায়নি যে অন্য সংগঠনের নেতাদেরকে পদ দিতে হবে। যাদেরকে পদ দেয়া হয়েছে তারা কর্মীসভা ও ছাত্রদলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলো।
জাগো নিউজ : দ্বিতীয় পার্লামেন্ট হিসেবে খ্যাত ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছেন?
আবুল বাসার : ছাত্রসংসদ নির্বাচন ভবিষ্যত নেতা তৈরিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ডাকসুর এমন অনেক নেতা রয়েছেন যারা রাজনীতির আইকন হিসেবে নিজেদেরকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটি ডাকসু নির্বাচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকের সঙ্গে প্রয়োজনে কথা বলবে। প্রশাসন নির্বাচনের আয়োজন করলে নির্বাচন সফল করতে ছাত্রদল সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। আমরাও চাই ডাকসু নির্বাচনটা খুব দ্রুত হোক। আবার জাতীয় পর্যায়ে নেতা বানানোর জন্য গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ধারক বাহক ডাকসু সচল হোক।
জাগো নিউজ : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আবুল বাসার : জাগো নিউজ ও আপনাকে ধন্যবাদ।
এমএম/জেএইচ/আরআইপি