৪ শিশু হত্যাকাণ্ড : আব্দুল আলীর আরেক ছেলের স্বীকারোক্তি
হবিগঞ্জের বাহুবলে আলোচিত ৪ শিশু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরো এক আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় তাকে হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহম্মদ খোন্দকারের আদালতে নেয়া হয়।
বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে বিচারকের খাস কামরায় তাকে জবানবন্দি রেকর্ড শুরু হয়। স্বীকারোক্তি দেয়া এ আসামি হচ্ছে ওই ঘটনায় ১০ দিনের রিমান্ডে থাকা আব্দুল আলী বাগালের ছেলে জুয়েল মিয়া।
এর আগে শুক্রবার তার ছোট ভাই রুবেল মিয়া একই ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
এদিকে শনিবার আটক সালেহ উদ্দিন আহমেদকে সে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার আদালতে হাজির করা হয়। এখন পর্যন্ত চাঞ্চল্যকর এ মামলায় আব্দুল আলী বাগালের দুই ছেলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তারা উভয়েই ঘটনার রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা হচ্ছে- আব্দুল আলী বাগাল, তার ছেলে জুয়েল মিয়া ও রুবেল মিয়া, আরজু মিয়া, বশির মিয়া, সালেহ উদ্দিন আহমেদ। এর মাঝে জুয়েল ও তার বাবা আব্দুল আলী বাগালকে ১৮ ফেব্রুয়ারি ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় ডিবি পুলিশ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, জুয়েল মিয়া ইতিপূর্বে স্বীকারোক্তি দেয়া তার ভাই রুবেলের অনুরূপ জবানবন্দি দিয়েছে। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বিষয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। জুয়েলের জবানবন্দির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের রহস্য আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ ঘটনায় তার বাবাসহ পরিবারের একাধিক সদস্য জড়িত রয়েছে।
শুক্রবার রুবেলের জবানবন্দির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের মোটিভ অনেকটাই উদঘাটিত হয়।
ঘাতক রুবেল আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া ৬ জনের নাম প্রকাশ করেছে। সে নিজে ছাড়াও জড়িত অন্যরা হচ্ছে আরজু মিয়া, রুবেলের ভাই বেলাল মিয়া, চাচাতো ভাই ছায়েদ মিয়া, অটেরিকশা চালক বাচ্চু মিয়া ও তার ভাই উস্তার মিয়া। এর মাঝে রুবেল ও আরজু ছাড়া অন্যরা এখনও গ্রেফতার হয়নি বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তবে তাদেরকে গ্রেফতারে প্রযুক্তির ব্যবহারসহ সব ধরণের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের আসা খুব দ্রুততম সময়ের মাঝেই এসব আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। তদন্তকারী দল রুবেলের দেয়া জবানবন্দির সূত্র ধরেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে।
অপরদিকে দুই ভাইয়ের স্বীকারোক্তিতেই ছিল বাবার আধিপত্য বিস্তার, তালুকদার গোষ্ঠীর লোকদের দ্বারা অপমানিত হওয়া এবং একঘরে করে রাখার জেরই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ।
এদিকে বাদীপক্ষের লোকজন রুবেলের দেয়া জবানবন্দির বাইরে আরো কয়েকজন জড়িত রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছে। তাদের এ সন্দেহের কারণে শনিবার সকালে সুন্দ্রাটিকি গ্রামের লোকজন গ্রেফতারকৃত বশিরের ভাই সালেহ উদ্দিন আহমেদকে ঘেরাও দিয়ে থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে ডিবি পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসএইচএস/পিআর