খুচরায় ৫ শতাংশ বাড়লো বিদ্যুতের দাম, গেজেট জারি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫৪ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২৩
ফাইল ছবি

দেশে ভোক্তাপর্যায়ে বিদ্যুতের খুচরা দাম বাড়লো ৫ শতাংশ। চলতি মাস (জানুয়ারি) থেকেই বিদ্যুতের নতুন দাম কার্যকর হবে। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) দাম বাড়ানোর গেজেট জারি করেছে সরকার।

সংশোধিত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) অধ্যাদেশের ক্ষমতা বলে সরকার প্রথমবারের মতো নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ালো। বিশেষ ক্ষেত্রে বিইআরসি ছাড়াই ভোক্তাপর্যায়ে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ ও সমন্বয়ে সরকারকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’-এ। গত ১ ডিসেম্বর অধ্যাদেশটি জারি করা হয়। অধ্যাদেশটিকে এখন আইনে পরিণত করার প্রক্রিয়া চলছে।

গেজেটে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩’-এর ধারা ৩৪ক-তে দেওয়া ক্ষমতাবলে সরকার ভর্তুকি সমন্বয়ে জনস্বার্থে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতাধীন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এবং নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের সরবরাহ করা বিদ্যুতের খুচরা মূল্যহার এবং বিদ্যুৎ সম্পর্কিত বিবিধ সেবার জন্য চার্জ/ফি পুনর্নির্ধারণ করলো।

আরও পড়ুন>> বিআরবি থেকে ১৪ হাজার কিলোমিটার বিদ্যুতের তার কিনবে সরকার

আবাসিকের লাইফ লাইন (৫০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী) গ্রাহকদের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৩ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩ টাকা ৯৩ পয়সা। ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের প্রতি ইউনিট ৪ টাকা ১৯ পয়সার জায়গায় ৪ টাকা ৪০ পয়সা গুনতে হবে।

এছাড়া আবাসিকের ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত প্রতি ইউনিটের দাম ৫ টাকা ৭২ পয়সা থেকে ৬ টাকা ১ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত প্রতি ইউনিট ৬ টাকা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৩০ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত প্রতি ইউনিট ৬ টাকা ৩৪ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৬৬ পয়সা হয়েছে।

এছাড়া ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিট পর্যন্ত আবাসিকের ব্যবহারকারীদের প্রতি ইউনিট ৯ টাকা ৯৪ পয়সার পরিবর্তে ১০ টাকা ৪৪ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের বেশি ব্যবহারকারীদের প্রতি ইউনিটের দাম ১১ টাকা ৪৬ পয়সার পরিবর্তে ১২ টাকা ৩ পয়সা গুনতে হবে।

এক্ষেত্রে আগে মাসে ডিমান্ড চার্জ ৩০ টাকা ছিল, এখন সেখানে বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা।

সেচ বা কৃষি কাজে ব্যবহৃত পাম্পের ক্ষেত্রে আগে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ছিল চার টাকা ১৬ পয়সা, এখন সেখানে বেড়ে হয়েছে ৪ টাকা ৩৭ পয়সা। ডিমান্ড চার্জ ৩৫ টাকা, যা আগে ছিল ৩০ টাকা।

ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে এখন ফ্ল্যাট রেট ৮ টাকা ৯৬ পয়সা, অফ পিকে ৮ টাকা ৬ পয়সা এবং পিকে ১০ টাকা ৭৫ পয়সা। আগে যা ছিল যথাক্রমে ৮ টাকা ৫৩ পয়সা, ৭ টাকা ৬৮ পয়সা এবং ১০ টাকা ২৪ পয়সা। ডিমান্ড চার্জ ৩০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০ টাকা।

নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১২ টাকার স্থলে এখন ১২ টাকা ৬০ পয়সা গুণতে হবে। শিক্ষা, ধর্মীয় ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতালের ক্ষেত্রে ইউনিট প্রতি নতুন দাম ৬ টাকা ৩২ পয়সা। আগে যা ছিল ৬ টাকা দুই পয়সা। রাস্তার বাতি ও পানির পাম্পের ক্ষেত্রে ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ খরচ ৭ টাকা ৭০ পয়সার পরিবর্তে ৮ টাকা নয় পয়সা হলো।

এছাড়া ‘বাণিজ্যিক ও অফিস’ শ্রেণিতে ইউনিট প্রতি ফ্ল্যাট রেট ১০ টাকা ৩০ পয়সার পরিবর্তে ১০ টাকা ৮২ পয়সা, অফ পিকে ৯ টাকা ২৭ পয়সার পরিবর্তে ৯ টাকা ৭৩ পয়সা ও পিক সময়ে ১২ টাকা ৩৬ পয়সার পরিবর্তে ১২ টাকা ৯৮ পয়সা দিতে হবে। মাসিক ডিমান্ড চার্জ ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৭৫ টাকা হয়েছে।

আরও পড়ুন>> ভারতের অনুমোদন পেলেই বাংলাদেশে আসবে নেপালের বিদ্যুৎ

গত ৮ জানুয়ারি রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে সঞ্চালন সংস্থা ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি হয়। গণশুনানি শেষে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি কমিটি ইউনিটপ্রতি এক টাকা ২১ পয়সা বাড়ানোর সুপারিশ করে।

ভর্তুকি কমাতে গত ২১ নভেম্বর পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি, যা ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর ঘোষণার পরই খুচরায় দাম বাড়াতে আবেদন করে বিতরণ সংস্থাগুলো। সেসব আবেদন কারিগরি কমিটিতে মূল্যায়ন শেষে তা গণশুনানিতে আসে।

সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সব পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। সেসময় পাইকারিতে দাম ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়ানোর পাশাপাশি সাধারণ গ্রাহক বা খুচরা পর্যায়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানো হয়।

আরও পড়ুন>> বিদ্যুতের খুচরা দাম বাড়ছে, প্রজ্ঞাপন আজই

আরএমএম/এমএএইচ/জিকেএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।