কাঁচি দিয়ে পল্লী চিকিৎসকের টনসিল অপারেশন


প্রকাশিত: ০৬:৩৭ এএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বেশ কিছুদিন ধরে টনসিলে ভুগছিলেন নূরজাহান বেগম (২২)। বাবা আব্দুল খালেক চিকিৎসার জন্য গোবিন্দগঞ্জের কোচাশহর ইউনিয়নের সিংড়া মধ্যপাড়া গ্রামের পল্লী চিকিৎসক সিরাজুল ইসলামের কাছে যান। চিকিৎসক সিরাজুল ইসলাম সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আব্দুল খালেকের বাড়িতে আসেন।

এরপর তিনি নুরজাহান বেগমকে বাড়ির আঙ্গিনায় বসিয়ে অপারেশন শুরু করেন। আর স্বজনদের নুরজাহানকে শক্ত করে ধরতে বলেন। চিকিৎসক সিরাজুল জিহ্বা টেনে ধরে কাঁচি দিয়ে কেটে টনসিল অপারেশন করেন। এসময় নুরজাহানের আর্ত-চিৎকারে লোকজন ছুটে আসেন।

সে সময় স্থানীয়দের প্রশ্নের জবাবে পল্লী চিকিৎসক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি অনেকদিন ধরে ফোড়া, টিউমার, টনসিল অপারেশন করি, কোনো সমস্যা হয়নি। অনেক রোগী ভাল হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালি ইউনিয়নের চকবরুল এলাকায়।

পল্লী চিকিৎসকের অস্ত্রোপচারের পর থেকেই গৃহবধূ নূরজাহান বেগমের (২২) অবস্থা সংকটাপন্ন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বুধবার রাত ৮টার দিকে তাকে সদর আধুনিক হাসপাতালে নেয়া হয়।

বুধবার সকালে চকবরুল গ্রামের নূরজাহানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এক মর্মান্তিক পরিস্থিতি। বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে নুরজাহান। গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে তার মা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমার মেয়ে ভালো আছে। আপনাদের কোনো সাহায্যের দরকার নেই।  

খবর পেয়ে গাইবান্ধা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাকিবের নেতৃত্বে ওইদিন একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তখন ওই গৃহবধূর মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল।  

উপ-পরিদর্শক রাকিব জানান, নুরজাহানের পরিবারের লোকজন তাকে জানায়, এ ব্যাপারে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। তাই  সেসময় কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায়নি।

বিষয়টি জানতে পরে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আশরাফুল ইসলাম বুধবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধা সদর থানার উপ-পরিদর্শক রাকিবকে ঘটনাস্থলে পাঠায়। পরে একদল পুলিশ গুরুতর অবস্থায় নুরজাহানকে উদ্ধার করে রাতেই গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ব্যাপারে গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, নুরজাহানের জন্য উন্নত চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ জাতীয় অপচিকিৎসা অমানবিক। পল্লী চিকিৎসক সিরাজুলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অমিত দাশ/এআরএ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।