সংসদে পাটমন্ত্রী

বন্ধ পাটকলগুলোর ১০৫৬ শ্রমিকের পাওনা পরিশোধে দেরি হচ্ছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪৪ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩

বন্ধ ঘোষণা করা সরকারি পাটকলগুলোর এক হাজার ৫৬ জন শ্রমিকের পূর্ণ পাওনা পরিশোধে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় এমপি এম আব্দুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীন বন্ধ ঘোষিত মিলগুলোর পাওনা ও অন্যান্য দায়-দেনা পরিশোধে ২০২১-২২ অর্থবছরে আটশ ৯১ কোটি ১৫ লাখ টাকা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট আটশ ৩০ কোটি ৮১ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। যার শতকরা হার ৯৩ দশমিক ২৩ শতাংশ।

আরও পড়ুন: রেলের ২৮১৭ একর জমি বেদখলে: সংসদে রেলমন্ত্রী

জামালপুর-৫ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে গোলাম দস্তগীর বলেন, উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতি বছর পাঁচ লাখ ৮০ হাজার পাট উৎপাদকারী চাষি ও ৪৫ হাজার পাটবীজ উৎপাদনকারী চাষিকে বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক ও কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়া ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে সারাদেশে তাঁত কারখানার সংখ্যা ২৭৭টি এবং তাঁত ইউনিটের সংখ্যা এক লাখ ১৬ হাজার ১৭৭টি। ২০১৮ সালের তাঁতশুমারি অনুযায়ী তাঁতশিল্প থেকে দেশের মোট বস্ত্রের চাহিদার শতকরা ২৮ শতাংশ পূরণ করা হয়ে থাকে (পাওয়ারলুম ছাড়া)।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, দেশে উৎপাদিত তুলায় বস্ত্র খাতের শতকরা দুই শতাংশ চাহিদা পূরণ হয়। বাকি চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে আমদানি বাবদ ২০২১-২২ অর্থবছরে তিন দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে।

তিনি বলেন, তুলা উৎপাদনে ছয় থেকে সাত মাস লাগে। এসময়ের মধ্যে চাষিরা একাধিক ফসল উৎপাদন করতে পারে। এ কারণে চাষিরা তুলা চাষে আগ্রহী হন না। আর তুলা চাষের জমির স্বল্পতা রয়েছে। দেশে উৎপাদিত তৈরি পোশাকের ৭৪ শতাংশই তুলা দিয়ে তৈরি হয়। বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের ৭৮ শতাংশ হাতে তৈরি সুতা দিয়ে। হাতে তৈরি সুতাভিত্তিক পোশাক উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা তুলা আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করতে সহায়ক হবে।

আরও পড়ুন: সরকারকে বিদ্যুৎ-গ্যাস-তেলের দাম সমন্বয়ের ক্ষমতা দিয়ে বিল পাস

নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের প্রশ্নের জবাবে পাটমন্ত্রী জানান, ২০১৮ সালের তাঁতশুমারি অনুযায়ী দেশে তাঁত সংখ্যা দুই লাখ ৯০ হাজার ২৮২টি (পাওয়ারলুম ছাড়া)। বাগেরহাট, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও ভোলা ছাড়া দেশের সব জেলায় কম-বেশি তাঁত রয়েছে।

তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নিট সুতার চাহিদা ১৬ লাখ মেট্রিক টন

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সৈয়দা রুবিনা আক্তারের প্রশ্নের জবাবে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নিট সুতার চাহিদা ১৬ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ১২ লাখ টন সুতা দেশে উৎপাদিত হয়, বাকি চার লাখ মেট্রিক টন আমদানি করা হয়।

ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৭ দশমিক ২৭ লাখ মেট্রিক টন পাট উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে চার দশমিক ১৫ লাখ মেট্রিক টন পাট রপ্তানি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ২০২২ সালে ২৬৪৮ মামলা, জরিমানা আদায় ৭১ লাখ ৫২ হাজার টাকা

তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১১২ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১২৯ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৩৮ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলারের কাঁচাপাট রপ্তানি করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির জন্য এক হাজার ২৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এইচএস/আরএডি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।