কাদা-ধুলার ভোগান্তিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের যাত্রীরা
রোদের সময় প্রচণ্ড ধুলাবালি আর বৃষ্টির সময় কাদা। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বর্তমান চিত্র এমন। অন্তত ৪০টি পয়েন্টে এ অবস্থার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে যান চলাচল। যাত্রী ভোগান্তির পাশাপাশি প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। খোলামেলাভাবে ট্রাকে বালু ও মাটি পরিবহন করার কারণেই সড়কের এমন অবস্থা হলেও কোন মাথা ব্যথা নেই সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের হেমায়েতপুর থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত অন্তত ৪০টি পয়েন্টে ট্রাকে করে মাটি ও বালু পরিবহন করা হচ্ছে। মহাসড়কের পাশের জমি অথবা বালু মহাল থেকে এই মাটি কেটে ট্রাকে করে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটা ও কারখানায়। ট্রাক থেকে রাস্তায় পড়ে থাকা মাটিই মহাসড়কে বালু ও কাদার সৃষ্টি করছে।
সাভারের হোমায়েতপুর, নবীনগর, কালামপুর, ইসলামপুর, ধামরাই, বাথলী, নয়াডিঙ্গী, গোলড়া, মানিকগঞ্জের ভাটবাউর, মূলজান, তরা, বানিয়াজুরি, জোকা, পুকুরিয়া স্টোন বিক্সস, মহাদেবপুর, বরংগাইল পয়েন্টগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির্পূর্ণ। ট্রাকে মাটি পরিবহনে ত্রিফল ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে নিয়মিত যাতাযাতকারী মোটরসাইকেল চালক শাহ আলম জাগো নিউজকে জানান, ওই সব পয়েন্টে ধুলাবালির কারণে চোখে কিছু দেখা যায় না। ধুলাবালির মধ্যে চলতে গিয়ে মাস খানেক আগে একটি পিকআপের সঙ্গে তার মোটরসাইকেলের সংর্ঘষ হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। 
বাস যাত্রী আলমগীর হোসেন, আয়েশা বেগম ও মনির মিয়া জানান, রাস্তায় চলার সময় বাসের জানালা খুলে বসা যায় না। চোখে মুখে বালু লাগে। ধোয়া কাপড় চোপড় ধুলাবালিতে নষ্ট হয়ে যায়।
বাস চালক আয়ুব আলী ও ট্রাক চালক সজিব মিয়া জানান, শুষ্ক মৌসুমে প্রচণ্ড ধুলাবালি আর বৃষ্টির সময় কাদায় যানবাহন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টির পর পিচ্ছিল কাদায় চলতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
পথচারী ইমরান ও আমেনা আক্তার জানান, ধূুলাবালির কারণে রাস্তায় চলাচল করা যায় না। রাস্তার পাশের দোকানপাটগুলোতেও বালু ঢুকে পড়ায় অনেক পণ্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধুলাবালির কারণে রাস্তার পাশের দোকানগুলোতে আগের চেয়ে বিক্রি কমেছে।
পরিবহন চালক, যাত্রী ও পথচারীদের অভিযোগ, ট্রাকে খোলামেলাভাবে বালু-মাটি পরিবহন করা হলেও কারো যেন কিছু করার নেই। ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষার নামে প্রতি দিন চাঁদা আদায়ে ব্যস্ত থাকে। তাদের সামনে দিয়ে শত শত মাটির ট্রাক চললেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না।
মানিকগঞ্জ জেলা ট্রাফিক পরিদর্শক মো. নুরুল ইসলাম জানান, মাটি পরিবহনের সময় প্রতিটি ট্রাকে ত্রিফল ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে অনেকেই তা মানছেন না।ধুলাবালি ও কাদার কারণে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত এবং যাত্রী ভোগান্তির বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, এটি দেখার দায়িত্ব সড়ক ও জনপথ বিভাগের।
তবে এ ব্যাপারে জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এসএস/পিআর