‘কালুরঘাট শিল্পাঞ্চলে পানির নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবার চেষ্টা দরকার’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৩০ পিএম, ২১ মার্চ ২০২৩

অপরিকল্পিত শিল্পায়নের ফলে দেশে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর হ্রাস পাচ্ছে। এমনকি রাজধানীর বাইরের শহরগুলোতেও একই চিত্র। বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে গত ৪০ বছরে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ২০ মিটার কমে গেছে। এই পানি সংকটের কারণে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কালুরঘাট শিল্প এলাকা।

বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়। রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ’তে হয় এই বৈঠক। এর আয়োজন করে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) এবং ওয়াটারএইড বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন: মার্চে মূল্যস্ফীতি বাড়বে, কমবে এপ্রিলে: পরিকল্পনামন্ত্রী

বৈঠকে পানি সংকট সমাধানে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা পানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং গুণগত মান ধরে রাখতে কালুরঘাটের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আরও উন্নত সমন্বয় এবং ব্যবসায় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সামষ্টিক কল্যাণ বিবেচনার ওপর জোর দেন। তারা জানান, কালুরঘাটে পানির নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবার চেষ্টা দরকার।

এসময় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ কালুরঘাট ভারী শিল্প এলাকার ‘র্যাপিড সিচুয়েশন অ্যাসেসমেন্টে’র ফলাফল এবং প্রাসঙ্গিক সুপারিশ উপস্থাপন করেন।

তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরকে পানির উৎস পুরোপুরি ধ্বংসের মুখে পৌঁছানোর আগেই শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ওপর সতর্কতা নির্দেশনা বাড়ানোর সুপারিশ করেন।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের শিল্প কার্যক্রমে পানি ব্যবস্থাপনার কার্যকরী উদাহরণ সৃষ্টি করছে। আমাদের সবাইকে এই উদাহরণ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। এটি প্রমাণনির্ভর অ্যাডভোকেসি করতে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেসরকারি খাতের অবদান স্বীকার করে সরকারের সঙ্গে সংলাপের পথ তৈরিতে সহায়তা করবে। এ ধরনের শিল্প-অংশীদারিত্ব মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পপ্রতিষ্ঠান সমূহের জন্য পানি ব্যবস্থাপনার টেকসই ও উন্নত কৌশল শেখারও সুযোগ তৈরি করবে।

আরও পড়ুন: ল্যাপটপ আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব

ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাভেদ আখতার বলেন, সমাজ, পরিবেশ ও অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পানি অপরিহার্য। বিশুদ্ধ পানি সুবিধা একটি মৌলিক মানবাধিকার। ৭০০ এর বেশি নদী নিয়ে গঠিত ব-দ্বীপ আমাদের বাংলাদেশ, যা জলবায়ু পরিবর্তন, দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং অদক্ষ পানি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন কারণে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম বিভিন্ন শিল্পের প্রাণকেন্দ্র, যেগুলো পানির ওপর বহুলাংশে নির্ভর করে। আমাদের পণ্যের উৎপাদন এবং ব্যবহারের জন্যও চাই পানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ।

তিনি আরও বলেন, আমরা জানি যে, অনেক অনিয়ন্ত্রিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান, যারা ভূগর্ভস্থ পানির মাত্রা হ্রাস এবং পানিদূষণের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে অবগত নয়। তাদের পানির প্রকৃত অর্থনৈতিক মূল্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই। এক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে এবং টেকসই ব্যবসায়িক অনুশীলন প্রচার ও নিশ্চিতের জন্য সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

এফআইসিসিআই’র পরিচালক জাহাঙ্গীর সাদাত বলেন, মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে বাংলাদেশ। তাই পরিবেশগত নিরাপত্তাসহ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে সচেতন ও দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করা জরুরি।

আইএইচআর/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।