মালি থেকে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:০৬ পিএম, ০৬ জুলাই ২০২৩
ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র সচিব

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সর্বসম্মতভাবে গত ৩০ জুন একটি রেজ্যুলেশন পাস হয়। ওই রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে কার্যত মালিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ম্যান্ডেট বাতিল ও মালি মিশন হতে সব শান্তিরক্ষী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব শান্তিরক্ষীকে মালি থেকে প্রত্যাহার করা হবে। এ বিষয়ে মালি সরকার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সাপ্তাহিক মিটিংয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এসব তথ্য জানান। সচিব বলেন, মালিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন বন্ধের মূল কারণ হলো- মালি সরকারের অসম্মতি।

তিনি বলেন, গত জুনে মালির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তিরক্ষীদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান। স্বাগতিক দেশের সম্মতি ছাড়া শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। একই মন্তব্য করেন নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্বে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিও।

২০১৩ সাল থেকে এ শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরু থেকেই মালিতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা মালিতে শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্বরত আছে। বর্তমানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী মিলিয়ে প্রায় ১৭০০ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী মালি মিশনে দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।

বাংলাদেশ ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি দেশের শান্তিরক্ষীরা মালি শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করছে। গৃহীত রেজ্যুলেশন অনুযায়ী- মালি মিশনে দায়িত্বরত সব শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহার করা হবে। জাতিসংঘের ম্যান্ডেটের অধীন ভবিষ্যতে যে কোনো শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রস্তুতি সবসময় রয়েছে।

সুদানে চলমান গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষিতে দেশটি থেকে বাংলাদেশিদের ফেরানোর বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল সংঘর্ষ চলমান। এ পর্যন্ত ছয়শোর অধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার সুদানে অবস্থানরত ১০৬২ জন বাংলাদেশি নাগরকিকে সুদান থেকে ফিরিয়ে এনেছে। প্রথমপর্যায়ে ৯০৩ জন বাংলাদেশিকে গত মে মাসে সরকারি খরচে সুদান থেকে বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়েছে।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দ্বিতীয়পর্যায়ে গত ১ জুলাই বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে (বিজি-৩২৬) ৮০ জন, ২ জুলাই বাংলাদেশ বিমানের আরেক ফ্লাইটে (বিজি-২২৬) ৫৯ জন ও ৩ জুলাই বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বিজি৩২৬-তে আরো ২০ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বদর এয়ারলাইন্সে সরকারি খরচে সুদান থেকে দোহায় পরিবহন করা হচ্ছে। দোহা পৌঁছামাত্র তাদেরকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের ফ্লাইটে বোর্ডিং করিয়ে দেওয়া হয়। প্রত্যাবাসিত প্রত্যেকেই দেশে ফেরার পর পকেটমানি হিসাবে পাঁচ হাজার টাকা ও খাদ্যসামগ্রী উপহার দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘পোর্ট সুদান বা দোহা- কোনো স্থানেই যেন প্রবাসীদের কোনো অসুবিধা না হয় সেজন্য উভয় জায়গায় প্রবাসীদের জন্য খাদ্য, পানীয়, চিকিৎসা ও সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবার প্রচেষ্টায় আটকেপড়া সব বাংলাদেশিকে নিরাপদে আমরা দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবো বলে বিশ্বাস করি।’

আইএইচআর/এএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।