খালে অবৈধভাবে মাছ চাষ বন্ধে দ্রুতই অভিযান: মেয়র আতিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:০৯ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মালিকানাধীন খালগুলোতে অবৈধভাবে মাছ চাষ বন্ধে দ্রুতই অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলশানে ডিএনসিসির সদরদপ্তর নগর ভবনে এক সভায় বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

মেয়র বলেন, আমি কিছুদিন আগে সূতিভোলা খাল পরিদর্শনে গিয়ে দেখি খালের ভেতর বাঁশ দিয়ে বেড়া তৈরি করে অবৈধভাবে মাছ চাষ করা হচ্ছে। আমি নৌকা নিয়ে বেশিদূর যেতে পারিনি। এভাবে খাল দখল করে যা খুশি তাই করা যাবে না। জনগণের খাল ব্যবহার করে মাছ চাষ করা যাবে না। খালে অবৈধভাবে এসব মাছ চাষ বন্ধে দ্রুতই অভিযান চালানো হবে।

অবৈধ দখল ও দূষণরোধ করতে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের খালের দখল ও দূষণরোধ করতে সব অংশীজনকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। আমরা চাই কমিউনিটিকে যুক্ত করতে। খালের পার্শ্ববর্তী অনেক জলাশয় আছে, যেখানে খাস জমি রয়েছে। এসব জমিগুলো খালের সীমানায় অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। খালের পাড় বাধাই করা হবে। খালের পাড়ে ওয়াকওয়ে থাকবে, সাইকেল লেন থাকবে এবং গাছ লাগানো হবে।

মেয়র আরও বলেন, শহরকে বাঁচাতে হলে খাল ও জলাশয়গুলোকে রক্ষা করতে হবে। সরকারি সব সংস্থাকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। একটি প্রকল্প গ্রহণের আগে সব সংস্থার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে হবে। সেনাবাহিনী ডিএনসিসির খালগুলোর সীমানা নির্ধারণের কাজ করছে। মহানগর জরিপে খালের আকার অনেক ছোট হয়ে গেছে। পূর্বের ন্যায় সিএস দাগ অনুযায়ী খালের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।

jagonews24

এসময় ডিএনসিসি মেয়র খালের সীমানা নির্ধারণ ও খালের পরিবেশ রক্ষায় করণীয় ঠিক করতে সব সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান কামরুন নাহার আহমেদ বলেন, ঢাকার প্রকৃত খাল উদ্ধার করতে হলে সিএস দাগ অনুযায়ী উদ্ধার করতে হবে। নদী ও খালের সাথে সম্পৃক্ত যে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করার আগে অবশ্যই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন থেকে অনাপত্তিপত্র নিতে হবে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে।

ঢাকা শহরের জন্য ন্যাচার বেজড সলিউশন খুবই দরকার জানিয়ে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, খালের প্রশস্ততা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে বর্ষায় পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। বর্ষার পানির প্রবাহ কতটুকু পর্যন্ত হয় সেটি বিবেচনায় নিয়েই খালের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। শহরের যানজট নিরসনে খালগুলোকে উন্নয়ন করে নৌপথ চালু করা প্রয়োজন। আরেকটি বিষয় অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যেন খালের মধ্যে কোন সুয়ারেজ সংযোগ না থাকে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পানি সম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বলেন, আমরা খাল যতই প্রশস্ত করি না কেন যদি সলিড ওয়েস্ট খালে ফেলা বন্ধ না হয় তাহলে সুফল পাওয়া যাবে না। তাই আইন প্রয়োগ করে এটি বন্ধ করতে হবে। আর অবশ্যই খালের পাড় দিয়ে ওয়াকওয়ে থাকতে হবে। ওয়াকওয়ে থাকলে খালে ময়লা ফেলার প্রবণতা অনেক কমে যাবে।

ঢাকা ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ঢাকা ওয়াসা থেকে একটি প্রকল্পের আওতায় কার্যক্রম করছি। মাদানি এভিনিউ এলাকার সূতিভোলা খালে নৌপথ চালুর যে পরিকল্পনা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নিয়েছে এর সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে ঢাকা ওয়াসা।

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজার সঞ্চালনায় সভায় ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহে আলম, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্লানার্সের (বিআইপি) সভাপতি মো. ফজলে রেজা সুমন, বেলার প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মুজাফফর ফয়সাল, নোঙ্গরের সভাপতি সুমন শামস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমএমএ/জেডএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।