গাবতলী ব্রিজের উপরে চামড়ার বাজার বসানো যাবে না: তাজুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৯ পিএম, ৩০ মে ২০২৪
ফাইল ছবি

রাজধানীর গাবতলী ব্রিজের উপরে কোরবানির পশুর চামড়ার বাজার বসানো যাবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। একই সঙ্গে কোরবানির পশুর বর্জ্যবাহী ময়লার গাড়ি নির্বিঘ্নে যেন আমিন বাজার ল্যান্ডফিলে যাতায়াত করতে পারে তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঈদুল আজাহা উপলক্ষে পশুর হাট ব্যবস্থাপনা, নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি বাস্তবায়ন ও কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতি পর্যালোচনা সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।

সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটির প্রতিনিধি, গাজীপুর সিটির মেয়র জায়েদা খাতুনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, কোরবানির পশুর রক্ত বা বর্জ্যে যেন ঢাকা শহরসহ সারাদেশের পরিবেশ দূষিত ও নোংরা না হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সূর্যোদয়ের আগে কোরবানির সব প্রকার বর্জ্য অপসারণ এবং কোরবানির স্থান পরিষ্কার করতে হবে। এক্ষেত্রে কোরবানিদাতারা যেন নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কোরবানির স্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন, সেজন্য উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম নেওয়া যেতে পারে।

কোরবানির পশুর হাট ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তাজুল ইসলাম বলেন, সড়ক ও মহাসড়কের উপর বা পাশে যেখানে স্বাভাবিক যান চলাচল বিঘ্নিত হতে পারে সেখানে কোনোক্রমেই কোরবানির পশুর হাট বসানো যাবে না। এ নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, কোরবানির পশুর হাটে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিতে হবে। কোরবানির পশুর হাটে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন করতে হবে। রাস্তাঘাট বা পশুর হাটে যেন কোনোরকম চাঁদাবাজি বা অবৈধ আর্থিক লেনদেন না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন পশুর হাটে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের সহায়তায় এটিএম বুথ, পয়েন্ট অব সেলস মেশিন, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে ক্যাশলেস বা নগদ টাকাবিহীন লেনদেনের ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন হাটবাজার ও কোরবানির পশু পরিবহনকালে অজ্ঞান বা মলম পার্টি যেন অপরাধমূলক কার্যক্রম সংঘটিত করতে না পারে সে বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ তদারকি বাড়াতে হবে।

নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি নিশ্চিতকরণ বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করতে হবে। পশু কোরবানির জন্য স্বাস্থ্যসম্মত স্থান নির্ধারণ এবং বর্ষাকাল বিবেচনায় সামিয়ানা বা ত্রিপল টানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পশু কোরবানির স্থান, ইমাম ও কসাইয়ের তালিকা করতে হবে। কসাইদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে।

‘ওয়েবসাইট, ডিজিটাল ডিসপ্লে, মাইক, লিফলেট, ব্যানার ও ক্যাবল অপারেটরে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা নিতে হবে। যুব ও সমবায় সংগঠনগুলোকে এ কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে। কোরবানির হাটে রোগমুক্ত পশু সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে’- এ প্রসঙ্গে যোগ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, রেল ও সড়ক কর্তৃপক্ষের অব্যবহৃত স্থান, কলোনি ও রাজউকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জায়গা অস্থায়ীভাবে পশু কোরবানির স্থান হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করবে। স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ এলাকাভিত্তিক পশুর হাট ও পশু কোরবানির নির্দিষ্ট স্থানের তালিকা জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে ব্যাপকভাবে প্রচার করবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় ক্যাবল টিভি অপারেটরদের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। কোরবানির পর পশুর চামড়া সংরক্ষণের লক্ষ্যে লবণ ব্যবহারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, এসব সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসকরা পৌর মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিয়ে ভার্চুয়াল সভার মাধ্যমে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন এবং প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন। একই সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে মসজিদের ইমামরা নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি এবং কোরবানির বর্জ্য অপসারণের বিষয়ে জনসচেতনতামূলক বক্তব্য দেবেন।

কোরবানির সঙ্গে সঙ্গে যেন পশুর চামড়ায় লবণ দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আইএইচআর/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।