সংসদে চুন্নু

বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউ ব্যবসা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৯ পিএম, ১২ জুন ২০২৪

বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউয়ের রমরমা ব্যবসা শুরু হয়েছে, যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু।

বুধবার (১২ জুন) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউয়ের রমরমা ব্যবসা শুরু হয়েছে। এটা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মানুষ মারা যাচ্ছে, মরদেহ আটকে রাখছে বিলের জন্য। এটা খুবই দুঃখজনক। বড় বড় হাসপাতালে রোগী মারা যাবার পর আইসিইউতে-লাইফ সাপোর্টে নিয়ে আটকে রাখছে। দুই-তিনদিন পর বলছে রোগী মারা গেছেন। এগুলো নজরদারি করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’

সাম্প্রতিক এক ঘটনার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘গত ১ জুন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর পল্লবীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন নাদিয়া। ভর্তির কয়েক দিন পরই মারা যান চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই রোগী। চিকিৎসায় অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে নাদিয়ার স্বামী পলাশ বলেন, ভর্তির পর দিনে তার ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। রাতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করলে দেখা যায় পেটের ১৬ সপ্তাহের সন্তান সুস্থ আছে। কিন্তু পরদিন নাদিয়ার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। সে ছটফট করছিল। কিন্তু রাত ১১ দিকে ডেকেও কোনো ডাক্তারকে রোগীর কাছে আনা যায়নি। ডাকার পর রাত ২টায় ডাক্তার এসে যখন দেখেন, তখন নাদিয়ার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছে। তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। এ সময় রোগীকে তার স্বামী আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে অন্য হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এই কথা বলার পরই আইসিইউয়ের দায়িত্বরত নার্সরা পোশাক বদলের কথা বলে নাদিয়ার আইসিইউ সাপোর্ট খুলে ফেলেন। রোগীকে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত কোনো স্যালাইন, কোনো অক্সিজেন ছাড়াই ফেলে রাখেন।’

‘এই অবস্থায় অন্য হাসপাতালে তাকে আর নেওয়া যায়নি। পেটের বাচ্চাটি মারা যান। পরে নাদিয়াকে লাইফ সাপোর্টে নেয়, কিন্তু তিনি আর বাঁচতে পারেননি। আমাদের সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সংকটের কারণে রোগীরা বেসরকারি হাপাতালে যায়। সেখানে গিয়ে বিপদে পড়ে। এগুলো নজরদারি করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশ হলে কয়েকদিন অভিযান দেখি, পরে সবাই ঘুমিয়ে যায়। আইসিইউ ও লাইফ সাপোর্টের বিষয়টা কঠিনভাবে দেখা দরকার। শুধুমাত্র অবহেলার কারণে ৩০ বছর বয়সের এক ব্যাংক কর্মকর্তা নারী পেটের বাচ্চাসহ মারা গেলেন! কতটা অমানবিক!’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কমিশনার ওয়াহিদা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার বিষয় উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বলেন, ‘একজন কর কমিশনার ১৭০ কোটি টাকা মাফ করে দেন! সেখানে এনবিআরের চেয়ারম্যান, অর্থসচিব ও অর্থমন্ত্রী কোথায়? এগুলো না দেখলে সরকারের ইমেজ বাড়বে না। দেশের স্বার্থে এটা কঠিনভাবে দেখা উচিত। চারটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সুদ উনি মাফ করে দিয়েছেন। এটা কেমন কথা?’

আইএইচআর/কেএসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।