উদ্বেগজনক মৃত্যু, প্রয়োজন সচেতনতা

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৮:৫৪ এএম, ১৯ এপ্রিল ২০২০

দেশে বজ্রপাত দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে উল্লেখযোগ্যহারে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের। বজ্রপাত একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এটি মোকাবিলার সহজ কোনো পন্থা নেই। সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য সহায়ক কর্মসূচির মাধ্যমে বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।

সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে চার কৃষক নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন হাওরে ধান কাটার সময় এবং একজন হাওরে ও অপরজন বাজারে যাওয়ার পথে মারা যান। বজ্রপাতে আহত হয়েছেন আরও দুই কৃষক। একই সঙ্গে বজ্রপাতে চারটি গবাদিপশুও মারা গেছে। গতকাল শনিবার জেলার চার উপজেলায় সকাল ১০ থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। বজ্রপাতে মৃত্যুকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘোষণার দাবিও উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বে বাংলাদেশেই বেশি। প্রতিবছর বজ্রপাতে যত মানুষ মারা যায় তার এক-চতুর্থাংশ মারা যায় বাংলাদেশে। দেশে প্রতি বছর গড়ে দুইশ থেকে তিনশ জনের মৃত্যু ঘটে বজ্রপাতে।

জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত বিরূপ পরিস্থিতিতে বজ্রপাত বাড়ছে বলে বিশ্লেষকরা বলছেন। শীত মৌসুমে দেশে প্রত্যাশিত বৃষ্টিপাত হয়নি। শীত পরবর্তী সময়ে ছিল না স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত। আবহাওয়ার এমন অস্বাভাবিক অবস্থা বায়ুমণ্ডলে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। আর বজ্রপাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বজ্রপাতে প্রাণহানি কমাতে জনসচেতনতা সবচেয়ে জরুরি। বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে করণীয় বিষয় পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তি করে ছোটবেলা থেকেই সচেতনতা বাড়াতে হবে। বজ্রপাত থেকে রক্ষার বিভিন্ন উপায় আরও বেশি করে প্রচার করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য বেশকিছু উপায়ের কথা বলছেন। এরমধ্যে রয়েছে- ১. দালান বা পাকা ভবনের নিচে আশ্রয় নেয়া, ২. উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুৎ লাইন থেকে দূরে থাকা, ৩. জানালা থেকে দূরে থাকা, ৪. ধাতববস্তু স্পর্শ না করা, ৫. বিদ্যুৎচালিত যন্ত্র থেকে সাবধান থাকা, ৬. গাড়ির ভেতর থাকলে গাড়িটি নিয়ে কোনো কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নেয়া, ৭. খোলা ও উঁচু জায়গা থেকে সাবধান থাকা, ৮. পানি থেকে দূরে থাকা ৯. পরস্পর দূরে থাকা, ১০. নিচু হয়ে বসে পড়া, ১১. বজ্রপাতের আগ মুহূর্তের লক্ষণ জানা, ১২. রবারের বুট পরা এবং ১৩. বাড়ি সুরক্ষিত রাখা।

বজ্রপাতে আহত হলে বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতো করেই চিকিৎসা করতে হবে। প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসককে ডাকতে হবে বা হাসপাতালে নিতে হবে। একইসঙ্গে এ সময় বজ্রাহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এ বিষয়ে প্রাথমিক চিকিৎসায় প্রশিক্ষণ নিয়ে রাখুন। বজ্রপাত থেকে বাঁচতে প্রকৃতির ওপর অত্যাচারও বন্ধ করতে হবে। গাছপালা লাগিয়ে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখাটাও জরুরি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এইচআর/বিএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।