কত মৃত্যুর পর আমরা সচেতন হবো?

করোনাভাইরাস সংক্রমণের অনেকদিন হয়ে গেছে। এখনও কোনো প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন পাওয়া যায়নি। অনেক দেশেই সংক্রমণ কমে এলেও বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান। বাড়ছে শনাক্তের সংখ্যা। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে চলেছে। বাস্তবতা হচ্ছে চিকিৎসা অপ্রতুল। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিষেধকের চেয়ে প্রতিরোধকেই গুরুত্ব দিতে হবে।
বিশেষজ্ঞরাও বলছেন এমন কথাই। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা প্রতিরোধকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধের উপায় হলো মাস্ক পরা, বারবার সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং জনসমাবেশ এড়িয়ে চলা। এই সব ধাপ আমাদের একসঙ্গে পালন করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বারবার এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক করছে। তারা বলছে, আমরা যদি এই নিয়মগুলো না মানি, তাহলে করোনাভাইরাস আরও অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে। পরিস্থিতি আরও মারাত্মক হতে পারে। আমরা আর মারাত্মকের দিকে যেতে চাই না। আপনারা সবাই সহযোগিতা করুন।’ গতকাল শুক্রবার (২৬ জুন) দুপুরে করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এসব তথ্য জানান তিনি।
নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা অনেককেই হারিয়েছি করোনার কারণে। আমরা চাই না, আর কেউ আমাদের মধ্য থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হারিয়ে যান। যারা হারিয়ে গেছেন, তাদের মধ্যে অনেক প্রতিথযশা, স্বনামধন্য ব্যক্তি এবং অনেক ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা রয়েছেন। ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধাদের মধ্যে চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, প্রশাসনের সদস্য, বিচার বিভাগের সদস্য। সবাই যে যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাচ্ছেন এবং সাধারণ মানুষ এই যুদ্ধের সঙ্গে শামিল হয়েছেন। যারা এই যুদ্ধে শামিল সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ হাজার ২৭৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৮ হাজার ৪৯৮টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ছয় লাখ ৯৬ হাজার ৯৪১টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৮৬৮ জনের মধ্যে। শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৯১ শতাংশ। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ৩০ হাজার ৪৭৪ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে মারা গেছেন ৪০ জন। এসব তথ্য গতকাল শুক্রবারের।
দুঃখজনক হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা প্রবল। এত মৃত্যু এত শনাক্তের পরও কোনোভাবেই লোকজন গা করছে না। এমনকি রেড জোনেও মানা হচ্ছে না কোনো নিয়নকানুন। ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এ অবস্থায় বাঁচতে হলে স্বাস্থ্যবিধিগুলো জানতে হবে। জানার পর মানতে হবে। আমরা যদি আত্মঘাতী না হই তবে নিজেদের সুরক্ষা নিজেদের হাতে- এই কথায় বিশ্বাসী হতে হবে।
এইচআর/বিএ/এমএস