দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখুন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত কারণে দেশে সংকট চলছে। মানুষজন রয়েছে চরম দুর্ভোগে। এই দুর্ভোগ আরও বাড়বে যদি দ্রব্যমূল্য নাগালে রাখা না যায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নাগালের মধ্যে রাখা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। সে লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপের বিকল্প নেই।
উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে গত এক সপ্তাহে নিত্যপ্রয়োজনীয় ৬টি পণ্যের দাম বেড়েছে। এই তত্য ওঠে এসেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনে। এর মধ্যে রয়েছে- চাল, সয়াবিন তেল, ছোট দানার মসুর ডাল, মুগ ডাল, অ্যাংকর ও জিরা।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে সব থেকে বেশি দাম বেড়েছে চালের। নাজির, মিনিকেট, পাইজাম, লতা, স্বর্ণ সব ধরনের চালের দাম গত এক সপ্তাহে বেড়েছে। এর মধ্যে নাজির ও মিনিকেট চালের দাম ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়ে কেজি ৫৪ থেকে ৬৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। বর্তমানে এই চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫৫ টাকা। গরিবের মোটা চাল হিসেবে পরিচিত স্বর্ণার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৮ টাকায়। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ২৪ শতাংশ। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে লুজ ও বোতল উভয় ধরনের সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। লুজ সয়াবিন তেল এক দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়ে কেজি ৮২ থেকে ৮৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বোতলের ৫ লিটার সয়াবিন তেলের দাম এক দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বেড়ে ৪৫০ থেকে ৫১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ছোট দানার মসুর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১৫ টাকায়, এতে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ। মুগ ডালের দাম ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়ে কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকা হয়েছে। অ্যাংকরের দাম ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা হয়েছে। আর জিরার দাম সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। এতে প্রতি কেজি জিরা ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা হয়েছে। কিছু পণ্যের দাম কমেছেও। মানুষজন চায় দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক থাকুক।
চলছে করোনা মহামারি কাল। বন্যার পানিতে ডুবে আছে দেশে একটা বড় অংশ। কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। সবমিলিয়ে জনজীবন পর্যুদস্ত। এরমধ্যে জিনিপত্রের দাম বাড়লে সেটি হবে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। দুঃখজনক হচ্ছে সিন্ডিকেটধারীরা ওতপেতে থাকে নাজুক সময়ে সুযোগ নেয়ার জন্য। তারা যাতে সেই সুযোগ নিতে না পারে এ জন্য বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে। সিন্ডিকেটচক্রের বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। তাছাড়া বাজারে টিসিবির মাধ্যমে পণ্যের সরবরাহও ঠিক রাখতে হবে। ব্যবসায়ীদের মুনাফালোভী মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। নীতিনৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে শুধু মুনাফার লোভ কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। এক্ষেত্রে সরকার, ব্যবসায়ীমহলসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
এইচআর/পিআর