স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্ধারিত ভাড়ায় চলুক গণপরিবহন

গণপরিবহন নিয়ে জনভোগান্তি নতুন কিছু নয়। করোনাকালে তা আরও বেড়ে যায়। এ যেন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সব ধরনের বাস-মিনিবাসে আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের কথা বলে ৮০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছেনা। এ জন্য যাত্রীস্বার্থ নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি।
কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে ৬৬ দিনের লকডাউন শেষে গত ১ জুনে থেকে শর্তসাপেক্ষে বাস চলাচল শুরু হয়। তখন থেকেই আদায় করা হচ্ছিল ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া। জনদাবির মুখে এবার করোনাভাইরাস মহামারির আগে বাসে ভাড়ার যে হার ছিল, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সেই হারে ভাড়া নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শনিবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবন থেকে ঢাকা সড়ক জোনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি একথা জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, “সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং জনস্বার্থ বিবেচনা করে সরকার আগামী ১ সেপ্টেম্বর হতে গণপরিবহনের আগের নির্ধারিত ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।”
তিন মাস পর আগের ভাড়ায় ফেরার ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত সংশ্লিষ্টদের প্রতিপালন করতে হবে বলে মন্ত্রী কাদের জানান। “গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, চালকের সহকারী, টিকেট বিক্রয়কারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান পানি অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। আসন সংখ্যার অতিরিক্ত কোনা যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। অর্থাৎ যত সিট তত যাত্রী পরিবহন নীতি কার্যকর হবে। দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।” যাত্রীদেরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
গণপরিবহন নিয়ে মানুষজনের ভোগান্তির কথা কেউ ভাবেনি। বরাবরই যাত্রীস্বার্থ থেকেছে উপেক্ষিত। কাঙ্খিত সেবা পাওয়া না গেলেও যাত্রীদের পকেট কাটা হয় ঠিকই। সিটিংয়ের নামে চিটিং। পরিবহনের মান খারাপ। নানা অভিযোগ রয়েছে। মরণঘাতী করোনাভাইরাস ছোঁয়াচে। গণপরিবহনে যদি স্বাস্থ্যবিধি মানা না হয় ভাইরাসের বিস্তারে সেটি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যেখানে মজ্জাগত হয়ে গেছে- সেখানে পরিবহন মালিকরা যে আইন মানবেন তার নিশ্চয়তা কোথায়? মনে রাখতে হবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে যাত্রী কিংবা পরিবহন সংশ্লিষ্ট কেউ কিন্তু রক্ষা পাবেন না। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং যাত্রীস্বার্থ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
এইচআর/পিআর