মহাখালীতে আটকে থাকা মানুষ, মন ছুটে বাড়ির আঙিনায়
মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে ভিড় ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ভোর থেকে গভীর রাত সবসময়ই মানুষের সারি, ব্যাগ-পট্টির গাদাগাদি, কোলের শিশুর কান্না, মুখে ক্লান্তির রেখা। তবে এই দৃশ্য যেন কেবল শারীরিক অপেক্ষা নয়, বরং এক মানসিক যাত্রার গল্প। ছবি: মাহবুব আলম
-
দাঁড়িয়ে আছে মানুষ, কিন্তু তাদের মন যেন অনেক আগেই পৌঁছে গেছে গ্রামের উঠোনে, মায়ের হাতের রান্নায়, ঈদের নামাজ শেষে পাড়াপ্রতিবেশীর সালামে।
-
এই ভিড়, এই ঠেলাঠেলি সবই যেন ঈদের আগে এক ধরনের আবেগঘন অনুশীলন, যেখানে অপেক্ষাটুকুও হয়ে ওঠে ভালোবাসার অংশ।
-
মহাখালীতে আজ শুধু বাসের অপেক্ষা নয়, আছে ঘরে ফেরার তীব্র আকুলতা, স্বজনদের বুকে জড়িয়ে ধরার অদম্য টান।
-
কেউ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার জন্য অপেক্ষা করছেন, কেউবা আগেই কেটে রাখা টিকিট হাতে নিয়ে অপেক্ষায় আছেন কাঙ্ক্ষিত বাসের জন্য। অপেক্ষার প্রহর যেন দীর্ঘ, তবুও তাতে নেই বিরক্তি। বরং সবার মুখে একটাই প্রত্যাশা যেন ঠিক সময়ে বাড়ি পৌঁছানো যায়।
-
শুধু পুরুষ যাত্রী নন, শিশু-বৃদ্ধ থেকে শুরু করে নারীরাও ছিলেন এই অপেক্ষমাণ ভিড়ে। কারো কোলে সন্তান, কারো হাতে ব্যাগ। এই দৃশ্য শুধু ঈদের আগেই দেখা যায় যেন ঈদ না, এ এক অদৃশ্য মানবিক মিলনমেলা।
-
সরকারি ছুটি শুরু হওয়ার আগেই অনেকে যাত্রা শুরু করছেন যেন ভিড় এড়ানো যায়। কিন্তু পরিস্থিতি বলছে, সেই ভিড় আর এড়ানো সম্ভব নয়।
-
এই ঈদযাত্রা শুধুই এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়ার নয়, এটি এক অন্তরঙ্গ যাত্রা। ত্যাগ আর ভালোবাসার উৎসব ইদুল আযহায় ঘরে ফেরা মানে যেন আত্মার কাছে ফেরা। আর তাই বাড়ির টানে যতই দীর্ঘ হোক লাইনের অপেক্ষা, মানুষ ফিরে যায়, ফিরে যেতে চায়… কারণ বাড়ির চেয়ে বড় আনন্দের স্থান আর কোথায়?