ক্ষীর চমচমের দেশে নেই দম ফেলার সময়
রাজবাড়ীর নাম শুনলেই যাদের চোখে ভেসে ওঠে নদী, খাল আর মাঠের ছবি; তারা হয়তো এখনো জানেন না, এ জেলায় রয়েছে এক গোপন স্বাদ-রাজ্য। এমন একটি স্বাদের নাম ‘ক্ষীর চমচম’। ছবি: রুবেলুর রহমান
-
মিষ্টির রাজ্যে বহু নাম থাকলেও, রাজবাড়ীর ক্ষীর চমচম যেন এক রাজাধিরাজ। ঈদের মতো উৎসব এলেই এর কদর বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
-
দোকানে দোকানে দীর্ঘ লাইন, মুখে একটাই কথা ‘ক্ষীর চমচম আছে?’ এমন দৃশ্য রাজবাড়ীবাসীর কাছে নতুন কিছু নয়।
-
এই অতুলনীয় মিষ্টিটি তৈরি হয় খাঁটি গরুর দুধ থেকে তৈরি ছানা ও মাওয়ার নিখুঁত প্রলেপে। রসালো ভেতর, আর বাইরে ছানার ঝরঝরে গুঁড়ার আচ্ছাদন; যেন এক মিষ্টি শিল্পকর্ম। আর সেই শিল্প রচনায় দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন মিষ্টি কারিগররা।
-
ঈদের মতো সময়গুলোতে যেন তাদের ঘুম নেই, দম ফেলার ফুরসতও নেই।
-
রাজবাড়ীর শাওন রায়, মনিরুল ইসলাম, তপন রায়সহ এমন অনেক কারিগর আছেন যারা দিন-রাত ছানা জ্বালিয়ে ক্ষীর চমচমের স্বর্গীয় স্বাদ তৈরিতে ব্যস্ত।
-
শুধু ক্ষীর চমচম নয়, রাজবাড়ীর মিষ্টির খ্যাতি পেয়েছে মালাইকারী, প্যাড়া সন্দেশ, লেডিকন, বরফি, কাটারিভোগ, রসগোল্লা, কালোজাম, রসমালাইসহ আরও অনেক পদের হাত ধরে। কিন্তু এসবের মাঝেও ক্ষীর চমচম যেন তার অবস্থান অটুট রেখেছে রাজকীয়ভাবে।
-
রাজবাড়ীর শহরে রয়েছে বেশ কিছু বিখ্যাত মিষ্টির দোকান ভাদু সাহা, শংকর সাহা, মিষ্টিবাড়ী, হোসেন মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। প্রতিদিন এখান থেকে বিক্রি হয় মন মাতানো স্বাদের হাজারো মিষ্টি। যারা একবার খেয়েছেন, তারা জানেন রাজবাড়ীর মিষ্টি শুধু মিষ্টি নয়, এক আবেগ ও ঐতিহ্য।
-
রাজবাড়ীর ক্ষীর চমচম শুধু জিভের স্বাদ নয়, এ যেন এক মিষ্টি স্মৃতি, এক শহরের আত্মপরিচয়। যেখানে উৎসব আসে, ঈদ আসে, মানুষ আসে-আর একটুখানি সুখ খুঁজে নেয় চমচমের রসে ভেজা সেই মোহনীয় কামনায়।