একদিন আগেই কোরবানির ঈদ, চাঁদপুরের শত গ্রামের ঐতিহ্য
সারা দেশে যখন ঈদুল আযহার প্রস্তুতি চলছে, তখন চাঁদপুরের শতাধিক গ্রামের মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করে কোরবানির মাংস বিলিয়ে দিচ্ছেন আত্মীয়-প্রতিবেশীদের মাঝে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে প্রায় শত বছর ধরে চলে আসা এ ঐতিহ্য অনুসরণ করে আজ ঈদ উদযাপন করছেন তারা। সাদ্রা দরবার শরীফকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এ ধর্মীয় ধারা এখন গ্রামবাংলার একটি ভিন্নমাত্রার ঈদ উৎসবে রূপ নিয়েছে, যেখানে ধর্মীয় আবেগ আর ঐতিহ্যের সম্মিলন ঘটে আগাম ঈদের ছোঁয়ায়। ছবি: শরীফুল ইসলাম
-
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফে আজ সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ইমামতি করেন দরবার শরীফের পীর জাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানি। একইদিন সকাল ৯টায় সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় আরেকটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়, যার ইমামতি করেন মাওলানা আরিফ চৌধুরী।
-
প্রায় ৯৬ বছর আগে, ১৯২৮ সালে সাদ্রা দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইসহাক চৌধুরী সৌদি আরবের অনুসরণে আগাম রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা পালন প্রথা চালু করেন। তখন থেকেই এই রেওয়াজ অনুসরণ করছেন চাঁদপুরের কিছু নির্দিষ্ট গ্রামবাসী।
-
গোপালগঞ্জ থেকে আগাম ঈদ উদযাপনে আসা মুসল্লি সাইফ বলেন, ‘আমি প্রথমবারের মতো এখানে ঈদের নামাজ পড়লাম। খুব ভালো লাগছে। সামনেও আসার ইচ্ছে আছে।’
-
স্থানীয় এক যুবক রাসেল বলেন, ‘গতকাল ছিল আরাফার দিন, যা সারা পৃথিবীর জন্য একদিনেই হয়। যেমন কেয়ামত সারা দুনিয়ায় একদিনেই হবে। সে হিসেবে আজই কোরবানির দিন, তাই আজ আমরা ঈদ পালন করছি।’
-
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, কচুয়া, শাহরাস্তি এবং মতলব উপজেলার অন্তর্গত অর্ধশতাধিক গ্রামে আজ ঈদ উদযাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সাদ্রা, বলাখাল, অলিপুর, সমেশপুর, প্রতাপপুর, মনিহার, বাসারা, লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উটতলি, কাইতাড়া, বদরপুর, মুন্সিরহাট, শোল্লা, গোবিন্দপুর, মোহনপুর, দশানী, পাঁচানীসহ আরও অনেক গ্রাম।
-
এসব গ্রামে ঈদুল আযহার নামাজ আদায় ও পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে ধর্মীয় আবহে উদযাপন করা হচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান এ ধর্মীয় উৎসব।