পর্দায় নেই, তবে ভক্তের হৃদয়ে রাজ করেন পপি
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র সাদিকা পারভিন পপি। দর্শক-প্রশংসকরা তাকে চেনেন শুধু ‘নায়িকা পপি’ হিসেবেই নয়, বরং একজন শিল্পী হিসেবে, যিনি তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা চলচ্চিত্রের পর্দা মাতিয়েছেন। আজ তার জন্মদিন। এই দিনে ফিরে দেখা যাক তার অভিনয়যাত্রা, অবদান আর ব্যক্তিত্বের ভিন্ন ভিন্ন দিক। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
-
পপির জন্ম খুলনায়। শৈশব-কৈশোর কেটেছে সাধারণ পরিবেশেই। তবে ছোটবেলা থেকেই শিল্প-সাহিত্যের প্রতি ছিল প্রবল আগ্রহ। আশির দশকের শেষের দিকে বিজ্ঞাপনচিত্রের মাধ্যমে তিনি মিডিয়ায় প্রবেশ করেন। সেখান থেকে পরিচালক আমজাদ হোসেন তাকে চলচ্চিত্রে নিয়ে আসেন।
-
১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া কুলি সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তার। সেই প্রথম ছবিতেই দর্শকদের নজর কাড়েন।
-
পপি শুধু গ্ল্যামারের জন্যই পরিচিত নন। বরং চরিত্রের গভীরে ঢুকে অভিনয় করার জন্যই তিনি অনন্য। গঙ্গাযাত্রা, মেঘের কোলে রোদ, কারাগার, শত্রু ঘায়েল কিংবা লাল দরিয়া-প্রতিটি ছবিতেই তিনি নিজেকে ভেঙেছেন, নতুনভাবে হাজির করেছেন। বাংলা চলচ্চিত্রে যে অল্প কিছু অভিনেত্রী সময়ের পরীক্ষায় টিকে গেছেন, পপি তাদের একজন।
-
অভিনয়ের স্বীকৃতি এসেছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও। পপি মেঘের কোলে রোদ (২০০৮), গঙ্গাযাত্রা (২০০৯) এবং কৃষ্ণপক্ষ (২০১৫) ছবির জন্য তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এটি তার অভিনয়জীবনের অন্যতম সেরা অর্জন, যা প্রমাণ করে তিনি কেবল নায়িকা নন, প্রকৃত অর্থেই একজন শক্তিশালী অভিনেত্রী।
-
পপি এরই মধ্যে পর্দার আড়ালেও চলে গেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাকে খুব একটা সিনেমায় দেখা যায় না। তবে তার প্রতিটি অনুপস্থিতিই দর্শকদের মনে প্রশ্ন তোলে-কোথায় গেলেন পপি? আবার কবে ফিরবেন তিনি? এর মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভক্তরা প্রায়ই তার পুরনো সিনেমার গান, সংলাপ আর ছবি শেয়ার করেন।
-
পপির ব্যক্তিজীবন সবসময় রহস্যে ঘেরা। তিনি কখনোই ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মিডিয়ায় আলোচনায় আসেননি। বরং নিজের গোপনীয়তাকে তিনি শক্ত দেয়াল দিয়ে আগলে রেখেছেন। সম্ভবত এই কারণেই তিনি অনেকের কাছে আরও বেশি আকর্ষণীয় ও আলোচিত।
-
আজ জন্মদিনে ভক্তরা হয়তো আবারও সেই পুরনো স্বপ্নে ডুব দেবেন। পপি ফিরে আসুক নতুন রূপে, নতুন সিনেমায়। তার অভিনয় যেন আবারও অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহকে আলোকিত করে।