খবরের কাগজ থেকে রূপালি পর্দা, বুবলীর রূপান্তর
বাংলাদেশের চলমান চলচ্চিত্রে যারা নতুন রূপ, ভাষা ও নারীর সংজ্ঞা খুঁজে পান, তাদের চোখে আজকের দিনটি বিশেষ। কারণ আজ শবনম ইয়াসমিন বুবলীর জন্মদিন। তিনি একজন অভিনেত্রী, যিনি নিজের পথ নিজেই তৈরি করেছেন। প্রচলিত ছক ভেঙে তিনি এমন এক পথচলার গল্প লিখেছেন, যেটি শুধুই তার নিজের ইচ্ছাশক্তির প্রতিচ্ছবি। ছবি: অভিনেত্রীর ফেসবুক থেকে
-
বুবলীর যাত্রার শুরুটা ছিল ক্যামেরার সামনে, কিন্তু সেখানে তিনি ছিলেন উপস্থাপক। পরিষ্কার উচ্চারণ, শান্ত আত্মবিশ্বাস এবং তথ্য পেশের স্থির স্বভাব এসবই তাকে দ্রুত দর্শকের নজরে আনে। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি সাংবাদিকতার পরিচয়ের আড়ালে। তার নিজের মনে ছিল আরেক টান, অভিনয়ের টান।
-
একদিন সেই টানই তাকে নিয়ে যায় সিনেমার জগতে। আর এটাই ছিল তার জীবনের প্রথম বড় সাহস। একজন সংবাদ উপস্থাপক থেকে পূর্ণাঙ্গ নায়িকা এমন রূপান্তর কেউ প্রতিদিন দেখেন না, আর যে দেখে, সে ভুলেও না।
-
বুবলী কোনোদিনই ক্যান্ডি-ইমেজের নায়িকা হতে চাননি। পর্দায় তাকে দেখা যায় কখনও রঙিন গানে, কখনও অ্যাকশন–ধাঁচের দৃশ্যে, আবার কখনও সংবেদনশীল চরিত্রে। বুবলী নিজেই নিজের একটা আলাদা পরিসর গড়ে নিয়েছেন যেখানে কেউ তাকে অনুকরণ নয়, বরং চেনা–অচেনা এক নারী চরিত্র হিসেবে আবিষ্কার করে।
-
বুবলীর জীবন যেন সিনেমার বাইরেও আরেক ধরনের স্ক্রিপ্ট। আলো তাকে ঘিরে রেখেছে, তবে সঙ্গে এসেছে ঢেউ সমালোচনা, গুঞ্জন, বিতর্ক। যেখানেই আলো, সেখানে ছায়াও থাকে। কিন্তু বুবলী প্রতিবারই সেই ছায়ার ভেতর দিয়ে আলো খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
-
বুবলীকে ঘিরে যত কথাই হোক, তার বড় শক্তি বৈচিত্র্যময় চরিত্র গ্রহণ করার সাহস। তিনি শুধু বাণিজ্যিক ঢঙের ছবিতে আটকে থাকতে চাননি, বরং নিজেকে নতুনভাবে তৈরি করার চেষ্টা করেছেন বারবার। হাসি, কান্না, প্রেম, শক্ত অবস্থান সব রূপেই তাকে দেখা গেছে। প্রতিটি চরিত্রে তিনি চেষ্টা করেছেন একটুখানি ‘নতুন বুবলী’ ঢুকিয়ে দিতে। এই চেষ্টা তাকে আলাদা করে।
-
জন্মদিনের দিন একজন মানুষের জীবনে সবসময়ই একটু ভিন্ন আলো পড়ে। তাকে ঘিরে আলোচনা ওঠে তার পথ, সিদ্ধান্ত, অর্জন, ঠিক-ভুল সবকিছুই। বুবলীর ক্ষেত্রেও আজ সেই চিত্রই ফুটে ওঠে। তার জীবনের গল্প প্রমাণ করে শুরুটা যেখান থেকেই হোক, শেষটা লিখে দেয় মানুষ নিজেই।