শুভ জন্মদিন মম
বাংলাদেশের অভিনয়াঙ্গনে যখন চমক, প্রতিযোগিতা আর পরিচিত মুখের ভিড় সেখানে ধীরলয়ের এক শান্ত আলোয় নিজের জায়গা করে নিয়েছেন জাকিয়া বারী মম। আজ তার জন্মদিন; দিনটি যেন প্রতি বছর আলাদা করে মনে করিয়ে দেয় একজন অভিনেত্রীর সাফল্য শুধু পর্দার সামনে দাঁড়িয়ে সংলাপ বলায় নয়, বরং প্রতিটি চরিত্রকে নিজের জীবনের অংশ করে তোলার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে। ছবি: ফেসবুক থেকে
-
মমর শুরুর গল্প রূপালি পর্দায় নয়, ম্যাগাজিন মডেলিং দিয়ে। সুস্পষ্ট চোখ, মৃদু হাসি আর অভিব্যক্তিতে স্বাভাবিক নিটোলতা তাকে দ্রুতই নজরে আনে। তবে তিনি কখনই শুধুই ‘গ্ল্যামার’ হতে চাননি। আলোর ঝলকানি পেরিয়ে যখন অভিনয়ের দুনিয়ায় এলেন, তখনই বোঝা গেল তার ভেতরের শিল্পী আরও অনেক গভীর।
-
২০০৬ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়া তার যাত্রাকে নতুন পথ দেখায়। সেই পথেই ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন নির্মাতাদের আস্থার নাম।
-
মমর চলচ্চিত্রে আগমনটা ছিল চমকপ্রদ। হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র দারুচিনি দ্বীপ–এ তার অভিনয় শুধু দর্শককেই মুগ্ধ করেনি, সমালোচকদেরও তাক লাগিয়েছিল। প্রথম সিনেমাতেই জাত চিনিয়ে দেন তিনি, চরিত্রের ভেতর ঢুকে গিয়ে স্বাভাবিক অভিনয় করার ক্ষমতা তার আলাদা সম্পদ।
-
এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেন, যা অনেক অভিনেত্রী পুরো ক্যারিয়ার জুড়েও পান না। শুরুতেই এমন অর্জন তাকে আরও দায়িত্ববান করে তোলে।
-
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি টেলিভিশন নাটকেও মম সমান স্বচ্ছন্দ। কখনো সাদামাটা গ্রামের মেয়ে, কখনো শহরমুখী সংগ্রামী নারী, কখনো সম্পর্ক হারানোর বেদনায় বিধ্বস্ত চরিত্র প্রতিটি ভূমিকায় তিনি গভীর মনোযোগ দিয়ে নতুন আকৃতিতে নিজেকে তৈরি করেছেন।
-
মৃদু অভিনয়, সঠিক ভঙ্গি ও চোখের ভাষায় অনুভূতি প্রকাশ এ সবকিছু মিলিয়ে তিনি ছোটপর্দার সেরা অভিনেত্রীদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন।
-
মমর অন্যতম বৈশিষ্ট্য নিজেকে খুব বেশি প্রচারের মধ্যে না রাখা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হতে তিনি কখনোই আগ্রহ দেখাননি। বরং তিনি বিশ্বাস করেন অভিনয়ই তার শক্তি আর সেই শক্তিকেই তিনি নিঃশব্দে পরিপূর্ণ করে যান। এই বিনয়, আত্মসংযম আর কাজের প্রতি অঙ্গীকার তাকে শিল্পী হিসেবে আরও আলাদা করেছে।
-
ক্যামেরার সামনে ব্যক্তিজীবন নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করেন না এই অভিনেত্রী। তিনি পরিবার, কাজ আর নিজের মানসিক প্রশান্তিকেই সব সময় গুরুত্ব দেন। একইসঙ্গে তিনি বিশ্বাস করেন, একজন অভিনেত্রী হিসেবে সমাজ, সম্পর্ক আর মানুষের ভেতরের গল্পগুলোকে বোঝা খুব জরুরি-যা তার চরিত্র বিশ্লেষণে সাহায্য করে।