ডেভিল হান্ট সময়মতো হলে সচিবালয়ে আগুন হতো না: ফারুক

ক্ষমতায় যাওয়ার পরপরই অন্তর্বর্তী সরকার সতর্ক দৃষ্টিতে ডেভিল হান্ট শুরু করলে সচিবালয়ে আগুন কিংবা গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর আক্রমণ কোনোটাই হতো না। এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
তিনি বলেন, সরকার গত তিনদিন আগে ডেভিল হান্ট শুরু করেছে। পুলিশের ভাষ্য, তিনদিনে ১ হাজারের ওপর গ্রেফতার হয়েছেন। জাহাঙ্গীর সাহেবের সততা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করলে আমি সেটার প্রতিবাদ করব। কিন্তু আমি জনগণের পক্ষ থেকে আপনার কাছে জানতে চাই, এই ডেভিল হান্ট কেন সময়মতো করা হলো না?
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে আয়োজিত এক প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী চালক দল।
অবস্থান কর্মসূচিতে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তি মৃত ব্যক্তির ভোটে ক্ষমতায় যেতে চায় না। তারেক রহমান বলেছেন, যারা গত ১৬ বছর হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আন্দোলনে ছিল, তাদেরকে নিয়ে তিনি নির্বাচন করবেন।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, অন্ধকার দিয়ে অন্ধকার ঢাকা যায় না। আলোর দরকার হয়। সেই আলো আমরা আপনার (ড. ইউনূস) কাছে আশা করি। দয়া করে আপনার সহকর্মীরা যাতে না বলেন, ৫৪ বছরে রাজনৈতিক দল সংস্কার করতে পারেনি, এমন কথা আপনার স্টাফরা যাতে না বলে। নির্বাচন ২০২৬ এর মাঝামাঝি হতে পারে- এমন বেফাঁস কথা বলে দেশের মানুষকে আর আতঙ্কিত করার কোনো প্রয়োজন নেই। সংস্কার কম সময়ের মধ্যে করে নির্বাচনের রোডম্যাপ দিন, তারিখ দিন। তাড়াতাড়ি করুন, না হলে অস্থিরতা আরও বেড়ে যাবে। আবার কোনো ষড়যন্ত্র হয়ে যাবে। সেই ষড়যন্ত্র রুখতে রুখতে আবার সময় অতিবাহিত করবেন। আমরা সেটা আর চাই না।
- আরও পড়ুন
- ভোটে ভরাডুবির ভয়ে বিএনপিকে ঘায়েল করার ষড়যন্ত্র চলছে: আব্বাস
- ২০০ আসন পেলেও বিএনপি একা সরকার গঠন করবে না: খসরু
তিনি আরও বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, নির্যাতন সহ্য করেছে আমার দলের কর্মী। তারা হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে পুলিশের ভয়ে রাত কাটিয়েছে। যারা জঙ্গলে, কবরস্থানে ঘুমিয়ে হাসিনার পুলিশের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেয়েছে, তাদের অনেক ক্ষোভ ছিল। শেখ হাসিনা বলেছিল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে, তাদের একটি কর্মীও থাকবে না। হাসিনা, মোদীর আশ্রয়স্থলে থেকে তুমি একবার চোখ বুলিয়ে দেখো, তারেক রহমান ৫ আগস্টের পর তোমার একটি কর্মীর গায়েও হাত দেয়নি৷ এটাই ব্যক্তিত্ব, এটাই তার গ্রহণযোগ্যতা। এই গ্রহণযোগ্যতাকে ঠেকাতে আরেকটি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই ষড়যন্ত্র রুখতে হবে।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আজ কেন, কার ইঙ্গিতে, কীসের ইঙ্গিতে, কার ষড়যন্ত্রের জালে আপনারা আবার পড়ে যাচ্ছেন? নির্বাচনের দেরি করে আবার মইন-ফখরুদ্দিনের জন্ম দেওয়া; এই ব্যাপারগুলো ইতোমধ্যে জনগণ বলা শুরু করেছে।
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার কথা উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, অসংখ্য আহত নেতাকর্মী আছেন যাদের চোখ নাই, হাত নাই, পা নাই। তাদের মায়েরা চোখের পানি ফেলছেন, চিকিৎসা নিতে পারছেন না। তাদের দাবি, নির্বাচন আর দীর্ঘায়িত করবেন না। অনুগ্রহ করে নির্বাচনের তারিখ দিন। কারণ নির্বাচন বিলম্বিত হলে আপনার (ড. ইউনূস) যে গ্রহণযোগ্যতা, আপনার যে ইতিহাস সেটা কলংকিত করবে আওয়ামী লীগাররা।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন কবিরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. জুয়েল খন্দকারের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুল্লাহসহ অন্য নেতাকর্মীরা।
এএএম/এএমএ/জিকেএস