ইসিকে এনসিপির প্রশ্ন
কোন আইনে ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ বা ‘লাল শাপলা’ বাদ দেওয়া হয়েছে
কোন আইনের ভিত্তিতে ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ বা ‘লাল শাপলা’ প্রতীককে বর্তমান তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তা নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) পরিষ্কার করতে হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শাপলা প্রতীক না দেওয়ার ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে আজ ইসিতে যায় এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল। সেখানেই তারা এমন দাবি তুলে ধরেন।
রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে তারা নির্বাচন কমিশনকে লিখিত জবাব দেন।
লিখিত জবাবে বলা হয়, বিগত ২২ জুন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন দাখিল করে এবং দলের অনুকূলে ‘শাপলা’ প্রতীক সংরক্ষণের জন্য আবেদন জানায়। এই আবেদন দাখিলের আগে এবং পরবর্তীসময় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এনসিপির প্রতিনিধিদল ধারাবাহিকভাবে দফায় দফায় বৈঠকে মিলিত হয়েছে, চিঠি দিয়েছে এবং শাপলা প্রতীকের ব্যাপারে দলের অনড় অবস্থান ব্যক্ত করেছে।
কিন্তু এনসিপি প্রেরিত দরখাস্তসমূহ অনিষ্পন্ন অবস্থায় রেখে নির্বাচন কমিশন বিধিবহির্ভূতভাবে সূত্রোক্ত চিঠি প্রেরণ করে এনসিপিকে স্বেচ্ছাচারীভাবে প্রার্থিত প্রতীকের বাইরে গিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো প্রতীক বরাদ্দ দেবে বলে হুমকি দিচ্ছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত, স্বেচ্ছাচারী এবং বেআইনি।
নির্বাচন কমিশনের আইনগত দায়িত্ব সম্পর্কে এনসিপির অবস্থান
১. প্রতীক অন্তর্ভুক্তি বা বাদ দেওয়ার মানদণ্ড প্রকাশের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা: নির্বাচন কমিশন অনুগ্রহপূর্বক লিখিতভাবে জানাবে কোন নীতিমালা, নির্দেশিকা বা মানদণ্ডের ভিত্তিতে ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ বা লাল শাপলা প্রতীকটি তালিকাভুক্ত প্রতীকের বাইরে রাখা হয়েছে। যদি এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা বিদ্যমান থাকে, তবে তা প্রকাশ করা ও সব দলের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য করা আবশ্যক।
২. ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা, ২০০৮’ -এর বিধি ৭(২) ও ফরম-২ অনুসরণের বাধ্যবাধকতা: নির্বাচন কমিশন যদি ২০০৮ সালের বিধিমালার বিধান অনুযায়ী দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ নেয়, সেক্ষেত্রে অবশ্যই এনসিপির প্রার্থিত প্রতীক ১. শাপলা, ২. সাদা শাপলা এবং ৩. লাল শাপলা থেকে যে কোনো একটি প্রতীকের নাম উল্লেখ করতে হবে।
এনসিপির দাবিসমূহ
ক. প্রতীক অন্তর্ভুক্তি বা বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনের বিদ্যমান নীতিমালা বা মানদণ্ড কী এবং কোনো আইনি ভিত্তিতে ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ বা ‘লাল শাপলা’ প্রতীককে বর্তমান তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে সেটি পরিষ্কার করতে হবে।
খ. যদি এমন কোনো মানদণ্ড এখনো প্রণয়ন না করা হয়, তবে নির্বাচন কমিশনকে তা অবিলম্বে প্রণয়ন ও প্রকাশ করতে হবে এবং সব রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
গ. নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালের বিধিমালার ফরম-২ অনুসারে এনসিপির প্রার্থিত প্রতীকের নাম উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে।
ঘ. কমিশন প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে যুক্তিসংগত, স্বচ্ছ ও ন্যায়সংগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে তার সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা প্রদর্শন করবে।
এনসিপির জবাবে আরও বলা হয়, গণমানুষের সাথে শাপলা প্রতীককেন্দ্রিক এনসিপির যে গভীর আত্মিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে, দেশের মানুষের সেই ভালোবাসাকে উপেক্ষা করার শক্তি তার নাই। ফলে শাপলা ব্যতীত নির্বাচন কমিশনের স্বেচ্ছাচারী আচরণের মাধ্যমে প্রেরিত ১৩ অক্টোবরের হুমকিমূলক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বেঁধে দেওয়া তালিকা থেকে অন্য কোনো প্রতীক পছন্দ করা এনসিপির জন্য সম্ভবপর নয়।
এমএইচএ/এসএনআর/এমএস