লিটলম্যাগ চত্বরে সাড়া নেই
নবীন থেকে সুপরিচিত লেখক হয়ে ওঠার অন্যতম মাধ্যম লিটল ম্যাগাজিন। খ্যাতিম্যান সব লেখকেরই হাতেখড়ি এতে। কিন্তু কালের বিবর্তনে আজ লেখকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। আগে লিটলম্যাগের প্রতি লেখক-পাঠকদের ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও আজ তা নেই বলেই মনে হয়। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এমন হচ্ছে বলে মনে করেন লিটলম্যাগের সম্পাদক ও প্রকাশকরা।
অমর একুশে বইমেলাতেও যেন আগের মতো সাড়া নেই। সোমবার বইমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের লিটলম্যাগ চত্বর ঘুরে দেখা যায়, অনেকটা প্রাণহীন এ চত্বর। বরাদ্দ পাওয়া ৯৮টি স্টলের মধ্যে বিকেল ৪টার সময়ও বসেনি ২৭টি স্টল। যেগুলো বসেছে তাতেও দর্শনার্থীদের সাড়া নেই।
বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, লিটলম্যাগ চত্বরের ৯৮টি স্টলের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব পাশের ১৩টি স্টলকে বিনা পয়সায় বসার সুযোগ দিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ। বাকিগুলো নামমাত্র ৫০০ টাকা মূ্ল্যে ভাড়া দেয়া হয়েছে।
নিয়মিত এসব প্রকাশনার উপস্থিতি না থাকার কারণ হিসেবে তারা বলেন, একজন লেখকের বই ছাপানো থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়। তাই মেলায় একজন বিক্রয়কর্মী রাখতে গেলে তাদের আরো ৫-৭ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। আবার কেউ কেউ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে বই বিক্রি করে থাকেন। তাই তারা একদিন আসলে পরের দিন আসতে পারেন না।

কয়েকটি প্রকাশনার প্রকাশকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাড়া না পাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রযুক্তির আধিক্য। আগে যে কেউ লেখালেখির হাতেখড়ি হতো এ লিটলম্যাগের মাধ্যমে। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির কারণে নবীন লেখকদের হাতেখড়ি হয় ফেসবুক ও ব্লগে। তাই পাঠকরাও সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি ঝুঁকছেন। যে কারণে নতুন লেখকদের লেখা পাঠকরা আর বইমেলা থেকে ম্যাগাজিন কিনে পড়েন না। অন্যদিকে লেখকরাও এসব ম্যাগাজিনে লিখেন না। তারা ফেসবুক-ব্লগে কয়েকদিন লিখে একটি বই বের করার চেষ্টা করেন।
শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির পত্রিকা ‘সন্ধ্যা’র পাবলিশার্স কিং সৌদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রযুক্তির কারণে নতুন প্রজন্ম লিটল ম্যাগাজিনের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। কেউ এখন আর লিটলম্যাগে লিখতে চায় না। ৮০-৯০ এর দশকে লেখকরা এর প্রতি বেশি নিবেদিত ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে এর প্রতি আগ্রহী দেখা যায় না।’
মেলা উপলক্ষে নতুন ম্যাগাজিন তুলনামূলক কম আসার কারণ হিসেবে স্বপ্ন ৭১’র সম্পাদক আবু সাইদ সুরুজ বলেন, ‘প্রচার প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এখন নতুন সংখ্যা বের করা অনেকটা কঠিন।’
এএসএস/এমএইচ/এসইউ/এসএইচএস/পিআর