তথ্য কমিশনের নির্দেশে আশা’র ৩ হাজার তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ


প্রকাশিত: ১০:৩১ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের আরিফুল আলম তথ্য অধিকার আইনের আওতায় ক্ষুদ্রঋণ ও সুদের হার সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে উন্নয়ন সংস্থা ‘আশা’র কাছে আবেদন করেন। এই আবেদনের তথ্য প্রদানে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় তথ্য কমিশনের নির্দেশে ‘আশা’ সারাদেশে তথ্য প্রদানের জন্য ৩ হাজার ৩৩ জন তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে।
 
একই গ্রামের আলেয়া খাতুনের মেয়ের নতুন বইয়ের জন্য প্রতি বছর স্কুলে টাকা দিতে হতো। নতুন বইয়ের জন্য টাকা লাগে কিনা- এ তথ্যের জন্য তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করেন। এ আবেদনের পর এ বছর আর স্কুলে বইয়ের জন্য টাকা দিতে হয়নি।

শুধু আরিফুল বা আলেয়া নন, চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের ৩২ জন গত ছয় মাসে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন দফতরে তথ্য জানার জন্য ৫৮টি আবেদন করেন। তথ্য অধিকার আইনের আওতায় তারা তথ্য যেমন পেয়েছেন, তেমনি এসব আবেদনের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দফতরে সেবা ও তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে।

এমআরডিআই’র নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান মুকুর জানান, গত বছর ২৩ থেকে ২৭ আগস্ট চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের শহীদ মসিয়ূর রহমান স্কুল প্রাঙ্গনে পাঁচ দিনব্যাপি তথ্য অধিকার ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। এই ক্যাম্পে তথ্য অধিকার ও এর সুফল বিষয়ে সচেতন করে তোলার পর তৃণমূল পর্যায়ের এই মানুষেরা তথ্য জানার জন্য বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেন। তাদের আবেদন ও ফলাফল জানাতে বুধবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তথ্য অধিকার ক্যাম্প ও পরবর্তী অভিজ্ঞতা বিষয়ের এ সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন এমআরডিআই’র নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান মুকুর। আর আবেদন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বিষয়ে অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন সিংহঝুলি গ্রামের আরিফুল আলম ও আলেয়া খাতুন, জগন্নাথপুর গ্রামের মিজানুর রহমান, জাহাঙ্গীর পুর গ্রামের আব্দুল জলিল প্রমুখ।
 
লিখিত বক্তব্যে এমআরডিআই’র নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান মুকুর জানান, তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকে তথ্য অধিকার বিষয়ে সচেতন করে তুলতে মাঠপর্যায়ে ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এমআরডিআই ও জাগ্রত নাগরিক কমিটি যৌথভাবে যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য পাঁচদিনের ওই তথ্য অধিকার ক্যাম্পের আয়োজন করে। তথ্য অধিকার ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দফতরে ৫৮টি আবেদন করেন। এরমধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৫০টি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ৮টি আবেদন করা হয়। আবেদনের পর শুরুতে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান তথ্য প্রদান করেছে। বাকিরা পরবর্তীতে তথ্য প্রদান করেছে। আংশিক বা ভুল তথ্য সরবরাহ করেছে ৭টি প্রতিষ্ঠান।   

এমআরডিআই’র নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান উল্লেখ করেন, দুই দশকের দাবির প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ২০ অক্টোবর সরকার তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ জারি করে। পরবর্তীতে জনগণের জানার অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি হ্রাস ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা, জনগণের চিন্তা, বিবেক ও বাকস্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে ২০০৯ সালের ২৯ মার্চ জাতীয় সংসদে ‘তথ্য অধিকার আইন-২০০৯’ পাস হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এমআরডিআই’র বিভাগীয় সমন্বয়কারী মবিনুল ইসলাম মবিন, জাগ্রত নাগরিক কমিটি চৌগাছা’র সভাপতি মাহবুবুল আশরাফ, এমআরডিআই সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার হামিদুল ইসলাম হিল্লোল ও ফিল্ড ইন্টারভেনশন কো-অর্ডিনেটর এসএম আরিফুজ্জামান।

মিলন রহমান/এমএএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।