গৌরবময় মার্চ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভার্চুয়াল সভা

কৌশলী ইমা কৌশলী ইমা , যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৯:৫২ এএম, ২৩ মার্চ ২০২১

গৌরবময় মার্চের নানা দিবস নিয়ে এক ভার্চুয়াল সভা করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী পরিবার। রোববার (২১ মার্চ) অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ, কানাডা ও নিউ ইয়র্কে বসবাসরত আওয়ামী লীগের নেতারা অংশ নেন।

সভায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও শিশুদিবস (১৭ মার্চ) এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস (২৬ মার্চ) উপলক্ষে তিন পর্বের আলোচনা হয়।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাজিয়ে ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। মহান ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর, ২১ আগস্ট, স্বৈরচারবিরোধী সব গণআন্দোলনে নিহত সব শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর পবিত্র কোরআন, গীতা ও ত্রিপিটক পাঠের মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ড. প্রদীপ রঞ্জন কর ও সঞ্চালনায় ছিলেন প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী।

আলোচকরা রক্তঝরা উত্তাল মার্চের অসহযোগ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধের ডাক, পাকিস্তানি শোষকদের ২৩ বছরের নিপীড়ন-নির্যাতন ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মদিন নিয়ে আলোচনা করেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

সভায় আলোচকরা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে নিরস্ত্র বাঙালিরা সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধায় পরিণত হন। নয় মাসের যুদ্ধে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সহযেগিতায় বীর বাঙালিরা তাদের প্রাণের দাবি আদায়ের যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানিদের পরাজিত করে। ৩০ লাখ শহীদ আর দুই লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি।

বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মদিন ও শিশুদিবসের ওপর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াসার সাবেক চেয়ারম্যান মো. রহমতউল্লাহ। আলোচক হিসেবে প্যানেলে ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নেতা হাজী শফিকুল আলম, টুঙ্গীপাড়া বাসূরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক অধীর শিকদার, সাদেকুল বদরুজ্জামান পান্না, শ্রমিক লীগ নেতা মঞ্জুর চৌধুরী ও মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রুমানা আক্তার।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষিবিদ ড. মকবুল হেসেন তালুকদার। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন- বীর মুক্তিযাদ্ধা ফারুক হোসাইন, অতীশ দিপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. কবির হেসেন তালুকদার, কানাডাস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সভাপতি কৃষিবিদ গোলাম মোস্তফা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা সম্পাদক এম এ করিম জাহাঙ্গীর ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টা ও সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২৬ মার্চের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য কৃষিবিদ ড. আব্দুল আওয়াল। প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. বখতিয়ার আলী ও নিউ ইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল।

আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন বীর মুক্তিযাদ্ধা ড. মহসিন আলী, বীর মুক্তিযাদ্ধা মুন্সী বসির উদ্দিন, বীর মুক্তিযাদ্ধা মিজানুর রহমান চৌধুরী, বীর মুক্তিযাদ্ধা শওকত আকবর রীচি, বীর মুক্তিযাদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলু, কাজী মনির হেসেন, আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম সরকার, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক কার্যকরী সদস্য ও শেখ হাসিনা মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কায়কোবাদ খান, অ্যাডভোকেট নিজাম, যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন, মেহরাব ইসলাম ফাহিম প্রমুখ।

আলোচনায় প্রধান অতিথি মো. রহমতউল্লাহ খুনি মোশতাকের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, আজ জননেত্রী শেখ হাসিনার আশপাশেও কত মোশতাক রয়েছে তা আমরা জানি না।

বিজ্ঞাপন

তিনি বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নাম উল্লেখ করে বলেন, উনারা ছিলেন সততার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আজ রাজনীতি টাকার কাছে জিম্মি। একজন সৎ ও নির্মোহ রাজনীতিক বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বে অর্থনৈতিক ইমার্জিং টাইগার হিসেবে আবির্ভূত করেছেন। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। বিশ্বের নামিদামি মিডিয়ায় বাংলাদেশ এক বিস্ময়ের নাম।

বিশেষ অতিথি ড. আওয়াল বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালেই বলেছিলেন পাকিস্তানিদের সঙ্গে থাকা যাবে না। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর থেকে সরকার পরিচালিত হয়েছে। এরকম অসহযোগ আন্দোলন ও ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ পৃথিবীতে বিরল।

শামীম চৌধুরী আবেগঘন উচ্ছ্বাস নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি চিঠি পাঠ করে শোনান। তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেই যুদ্ধে গিয়েছিলেন। উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান তিনি। আলোচনার মাঝে মাঝে স্বাধীন বাংলা বেতারের কালজয়ী গান ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সভার সভাপতি ড. প্রদীপ রঞ্জন কর আলোচনার শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেন এবং শেষে সব আলোচকদের ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি টানেন।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

পরিশেষে আলোচকরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ও আদর্শের বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ও মেগা উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়ার শপথ গ্রহণ করেন।

এমআরআর/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - jagofeature@gmail.com