গল্প শুনে হাসলে আমাদের এক ডলার দেবে

প্রবাস ডেস্ক
প্রবাস ডেস্ক প্রবাস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৫৫ এএম, ২৮ মে ২০২৩

মিনহাজ আহমদ

লেকের তীরে পাখির ছবি তুলবো বলে বেঞ্চে বসেছি। এমন সময় দুটি স্কুল-বয়সী ছেলে এসে দ্বিধাগ্রস্ত কণ্ঠে বললো- আমরা একটা গল্প বলবো, গল্প শুনে তুমি যদি হাসো, তাহলে আমাদের এক ডলার দেবে। বলবো নাকি?

ছেলে দুটিকে দেখে আমার মায়া লাগলো, কিন্তু আমার কাছে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া নগদ এক ডলার কেন, কানা-কড়িটিও নেই! এটা মনে হতেই আমার হাসি পেলো।

হঠাৎ মনে হলো স্বপ্নার কথা। ওর কাছে খুচরো ডলার আছে কয়েকটি। ছেলে দুটিকে বল্লাম, তোমরা রাস্তায় গেলে দেখবে একটা ছাঁই রঙের গাড়ি, সেটাতে হলুদ ছাপা জামা পরা এক মহিলা। তার কাছে খুচরো ডলার আছে। আমার কথা বললে সে হাসবে এবং ডলারও দেবে।

স্বপ্নাকে হাসানোর জন্য ছেলেদের গল্প বলতে হয়নি। বাসায় আসার পর থেকে ভাবছি, আমার উচিত ছিলো ছেলে দুটিকে জিজ্ঞেস করা যে, ওরা ডলার দিয়ে কী করবে। ওদের বয়স এত কম যে, মদ-গাঁজা খাওয়ার কথা চিন্তাই করা যায় না। হয়তো কিছু হাল-ফ্যাশনের জামা-কাপড় কিংবা জুতো কিনবে! ওদের অর্থ উপার্জনের অভিনব পন্থাটি আমার কাছে বেশ মজার মনে হয়েছে।

Story1.jpg

পুঁজির দেশ আমেরিকা। সব কিছুর মান নির্ধারিত হয় অর্থমূল্যে। এজন্যই আমদানি-নির্ভর রাষ্ট্র হয়েও পুঁজির ব্যবসা করেই পৃথিবীর সেরা।

আমরা যেন অর্থের লোভে পড়ে না যাই, সেজন্য শৈশবে আমাদের অর্থ থেকে দূরে রাখা হয়েছে। এটা শুধু আমাদের পরিবার নয়, মোটামুটি সব পরিবারের বেলাতেই সত্য।

সবচেয়ে বড় সত্য হলো, যে দেশের ছেলেমেয়েদের স্কুলে থাকা অবস্থায় টাকা-পয়সার সঙ্গে পরিচিত হতে দেওয়া হয় না, সে দেশের ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে ব্যাপকভাবে, সৎ কিংবা অসৎপথে অবলীলায় অর্থ উপার্জন করতে শিখে যায় কোনো ওস্তাদ ছাড়াই!

প্রাসঙ্গিক ছবি/স্থান: ক্যাপ্টেন টিলি পার্ক, জ্যামাইকা, ২৬ মে, ২০২৩

এমআরএম/এমএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]