কনা-ইমরানে মেতেছেন মিশিগানের তরুণ তরুণীরা

আশিক রহমান
আশিক রহমান আশিক রহমান মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র
প্রকাশিত: ০২:০৭ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মেলা কিংবা উৎসব হলেই মিশিগানের বাংলাদেশিদের মাঝে আনন্দের সীমা থাকে না। যেন আবদ্ধ ঘরে এক চিলতে রৌদ্রের কোমল শিহরণের মতো। শীতলের মাঝে ডিট্রয়েট সিটির জেইন ফিল্ডের বাংলা টাউনে কয়েক হাজার বাংলাদেশির উপস্থিতি ছিল যেন কাজের ফাঁকে আনন্দের প্রশান্তি।

১৫-১৭ সেপ্টেম্বর মিশিগানে সামার সিজনের শেষ আয়োজনটি ছিল ২২তম ডাইভারসিটি ফ্যাস্টিভ্যাল বাংলা টাউন মেলা। ৩ দিনব্যাপী মেলার শেষদিন রোববারে কনা-ইমরানের আগমনে মেলা প্রাঙ্গণ ছিল লোকে লোকারণ্য। তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে কনা-ইমরানের আমেরিকা সফরের ১০টি কনসার্টের ৫ম আয়োজন ছিল মিশিগানের বাংলা টাউনে।

সমাপনীতে বক্তব্য দেন মিশিগানে স্টেটের লুইটেনেন্ট গভর্নর গার্লিন গিলগিস্ট, হ্যামট্রামিক সিটি মেয়র আমির গালিব ও কাউন্সিলর আবু মোসাসহ কাউন্সিলররা, ওয়েন কাউন্টি কমিউনিটি কলেজ ট্রাস্টি কামাল রহমান ও এপিআইএ ভোট মিশিগানের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর রেবেকা ইসলামসহ অন্যান্য অতিথি।

কনা-ইমরানে মেতেছেন মিশিগানের তরুণ তরুণীরা

আয়োজক কমিটির সেলিম আহমেদ ও নাজেল হুদার হাতে প্রধান অতিথি মিশিগান স্টেট গভর্নর অফিস স্পেশাল ট্রিবিউট প্রদান করেন। সন্ধ্যা নামার সঙ্গেই সংবাদ পাঠিকা রেজুওয়ানা এলভিস যখন সময়ের আলোচিত গায়িকা কনার নাম উচ্চারণ করেন শুরু হয় দর্শকদের করতালি। কনা নিজের জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করেন।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্টেজে আসেন হালের জনপ্রিয় গায়ক ইমরান। হাঁটি হাঁটি পা পা করে গান শুরু করেন ‘বুকের মাঝে মন যেখানে রাখব তোকে সেখানে’, ‘তুই কি আমার হবি রে’। এক এক করে অনেকগুলো পরিবেশনার পাশাপাশি সুড়ঙ্গ ও প্রহেলিকা সিনেমার গান শোনান দর্শকদের। সর্বশেষ কনা-ইমরানের কয়েকটি দ্বৈত গানে তরুণ-তরুণীরা নেচে গেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন।

কনা-ইমরানে মেতেছেন মিশিগানের তরুণ তরুণীরা

দিলশাদ নাহার কনা বলেন, বিদেশের মতো জায়গায় সাধারণত সপ্তাহের শেষ দিকে অনেকের পারিবারিক কাজ থাকে। তবে দর্শকদের উপস্থিতি দেখে সত্যিই ভালো লেগেছে। মনে হয়েছে বাংলাদেশের কোথাও গান করছি।

তিনি জানান, এখন পর্যন্ত পাঁচটি শো শেষ হয়েছে। আগামী ১ অক্টোবর নিউইয়র্কে সর্বশেষ কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যাশা করছেন, সেই কনসার্টে দর্শকরা উপস্থিত থাকবেন।

ইমরান মাহমুদুল বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে যতগুলো কনসার্ট করেছি, মিশিগানের আয়োজনটি সেরাদের মধ্যে একটি কনসার্ট। আমরা যখন দেশের বিভিন্ন জেলায় গান করতে যাই, যেভাবে আমাদের কাছে টেনে নেন, এখানেও বসবাসকারী বাংলাদেশিরা সেই ভালোবাসা দিয়েছেন। আশা করছি আমাদের বাকি শোগুলো অনেক ভালো হবে।

কনা-ইমরানে মেতেছেন মিশিগানের তরুণ তরুণীরা

মেলার দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে গান পরিবেশন করেন ফোক গানের জনপ্রিয় শিল্পী শাহনাজ বেলি, মেহজাবিন নেহা, মমোসহ স্থানীয় ব্যান্ড দল টেন অ্যান্ড হাফ মাইলসহ অন্যান্য শিল্পীরা। মেলায় ছিল চিরায়িত বাঙালি খাবার, গহনা, শিশুদের জন্য খেলার দোকান। এমনকি দর্শকের জন্য আয়োজন করা হয় রেসলিং শো।

মেলায় আগত দর্শনার্থী কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের ২টি বুথ এবং লটারির মাধ্যমে ট্যাবলেট বিতরণ। এপিআইএ ভোট মিশিগানের সৌজন্যে শিক্ষা উপকরণসহ ৫০০টি স্কুল ব্যাগ দেন ও সদ্য ভোটার হওয়া নাগরিকদের জন্য লটারির মাধ্যমে একটি আইফোন। পাশাপাশি রাফেল ড্রতে পুরস্কার ছিল গাড়িসহ নানা পুরস্কার।

আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী বছরের সেপ্টেম্বর মাসের লেবার ডে সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে ২৩তম ফেস্টিভ্যাল। যথারীতি বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পীরা তো আসবেনই, থাকবে আরও নতুনত্ব।

এমআরএম/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]