সিডনির ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলে জমজমাট ক্রীড়া উৎসব

ক্রীড়া সৃষ্টি করে বন্ধুত্ব, ক্রীড়া তৈরি করে একতা, ক্রীড়া নিশ্চিত করে সহযোগিতা ও সহমর্মিতা। ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল বিশ্বাস করে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি ক্রীড়া মনস্ক মানবিক মানসিকতা সৃষ্টিও অতীব জরুরি। আর তাই ‘সবার জন্য ক্রীড়া আর বিজয়ীও সবাই’ এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করে সুস্থ বিনোদন খেলাধুলার জন্য বাংলা স্কুলের বার্ষিক কার্য তালিকায় একটি দিন স্বভাবতই ধার্য করা আছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল প্রাঙ্গনে এই বহু প্রতীক্ষিত ক্রীড়া উৎসবের আসর বসে। সকাল দশটায় বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে এবং ট্র্যাডিশনাল কাস্টোডিয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই আয়োজনের সূচনা করেন স্কুলের সাধারণ সম্পাদক কাজী আশফাক রহমান।
আবহমান গ্রাম বাংলার খেলাধুলার প্রদর্শনী
দৌড়, স্মৃতিশক্তি চর্চা, সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষা, বল কিকিং, বোলিং, সাত চারা, এক পায়ে লম্ফ, ফুল টোকা, দড়ি লাফানোসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় খেলায় ছাত্রছাত্রীরা অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে অংশগ্রহণ করে। অভিভাবক ও কার্যকরী কমিটির সদস্যরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই ক্রীড়া উৎসবে যোগদান করেন।
নিয়মিত খেলাধুলার পাশাপাশি ছিল আবহমান গ্রাম বাংলার খেলাধুলার প্রদর্শনী। সেখানে স্থান পায় গ্রাম বাংলার ষোল গুটি, বাঘবন্দি এবং পাঁচ গুটি খেলা। ডাংগুলি খেলার ডাং আর গুলি দেখে বাচ্চাদের প্রশ্ন ছিল এটা কিভাবে খেলা হয়। ছিল চোর পুলিশ খেলার প্রদর্শনী।
অভিভাবকদের ফুল টোক্কা খেলার একটি মুহূর্ত
এছাড়াও ছিল লুডু এবং ক্যারম খেলার বোর্ড। আরও ছিল সাত চাড়া খেলার সরঞ্জাম। তবে বাচ্চাদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল বাংলাদেশের সুপারি গাছের খোলের আদলে পাইন গাছের খোলের প্রদর্শনী। এটা হাতের কাছে পেয়ে তারা আর দেরি না করে চড়ে বসলো যাত্রী হিসাবে। আর বাকি সকলে মিলে তাকে টেনে নিয়ে চললো। আর অভিভাবকদের জন্য ছিল ফুল টোক্কা খেলার ব্যবস্থা। ফুল এবং ফলের নামে দুটো দলে ভাগ করে এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই খেলার মাধ্যমে মুহূর্তের জন্য অভিভাবকরা যেন তাদের শৈশবে ফিরে গিয়েছিলেন।
বার্ষিক এই ক্রীড়া উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সদস্য নাজমুল আহসান খান, শুভাকাঙ্ক্ষী ও সাবেক অভিভাবক নাহার খান সন্ধ্যা, অধ্যক্ষ রুমানা খান মোনা, শ্রেণি শিক্ষক শায়লা ইয়াসমীন নুসরাত, অনিতা মন্ডল, বিশাখা পাল, নুসরাত মৌরি ও সায়মা হক।
ক্যারাম বোর্ড
ক্রীড়া সম্পাদক রাফায়েল রোজারিও এর তত্ত্বাবধায়নে এবারের ক্রীড়া উৎসব পরিচালনা করেন কার্যকরী কমিটির সদস্য ইয়াকুব আলী। খেলা পরিচালনায় সহযোগিতা করেন আসাদ, তাবাসসুম, মিতু, লিন্ডা, টপি, লুৎফা, সিলভিয়া, ইয়াসমীন, ম্যাগডালিনা, নূরীণ, আলিশা, দৃপ্ত, সৃজা প্রমুখ।
আপ্যায়নে ছিলেন নুরুল ইসলাম শাহিন, ফায়সাল খালিদ শুভ, মসিউল আজম খান স্বপন, আজিজুর রহমান, মৃন্ময় পাল, সুমিত রায়, জিশান আলী, রঞ্জন পাল, মাসুদ পারভেজ ও কাজী আশফাক রহমান। দুপুর আড়াইটায় সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামীতে আরও আকর্ষণীয় ক্রীড়া উৎসব আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করে উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
সূদুর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বাংলাদেশের শৈশব
ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল প্রতি রোববার সকাল দশটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।
এমআরএম/এমএস