মালয়েশিয়ায় কমছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা
মহামারি করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সারাবিশ্ব টালমাটাল। আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হিমশিম খাচ্ছে গোটাবিশ্ব। প্রতিনিয়তই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। তবে এ ভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্বকে চমকে দিয়েছে এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া।
কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ১০ এর নিচে নেমে না আসা পর্যন্ত লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেবে না মালয়েশিয়া। ফের ১২ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে মুভমেন্ট কন্ট্রোল ওয়ার্ডার। যদিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই কমতে শুরু করেছে আক্রান্তের সংখ্যা।
সংকটকালে করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের তিনজন ডাক্তারের মধ্যে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক ডা. নূর হিশাম আব্দুল্লাহ রয়েছেন ৩য় স্থানে। প্রতিদিন মিডিয়ার সামনে সচেতনামূলক পরামর্শ দিয়ে ও কোভিড নিয়ন্ত্রণে রাখায় জাতীয় হিরো হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
তিনি যোগ করেছেন ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে নতুন মাত্রা। সেইসঙ্গে মৃত্যুহারও আগের মতো আর নেই। দেশটিতে আতঙ্কের বদলে ফিরতে শুরু করেছে স্বস্তি। যেখানে প্রতিদিন দুই শ’রও বেশি আক্রান্ত হতো সেখানে বর্তমানে আক্রান্ত কমে গেছে অনেকটাই। আইসিইউতে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৮২০ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ হাজার ৯৫৭ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৯ জন।
চলাচলে নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে শুরু করেছেন নাগরিকরা।
এছাড়া শর্তসাপেক্ষে চালু করা হয়েছে বিভিন্ন কলকারখানা। পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলেই খুলে যাবে সব। ইতোমধ্যেই সরকারের পাশাপাশি দেশটির বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগে নাগরিকদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে।
এছাড়া দেশটিতে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে নিরলস চেষ্টাসহ খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও বাংলাদেশি জনহিতৈশীরা। মিশনের এ সহায়তা কেউ পাচ্ছেন আবার কেউ পাচ্ছেন না এমন অভিযোগ রয়েছে।
কিন্তু এই সহায়তা নির্দিষ্ট একটি আবেদনের মধ্যেমে দেয়া হচ্ছে এমনটি জানালেন সংশ্লিষ্টরা। মালয়েশিয়া বাংলাদেশ হাইকমিশনের খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ সহায়তা পেয়েও অনেকেই ঝাড়ছেন দূতাবাস তথা সরকারকে। সহায়তা পাওয়া অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন।
রাজধানী কুয়ালালামপুর শহর ও সেলাঙ্গুরে মুভমেন্ট কন্ট্রোল কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রবাসীদের ফোন করে দূতাবাসের খাদ্য সহায়তা কাজে নিয়োজিত মালয়েশিয়ার এমটি ইউসির ভোলান্টিয়াররা ফোন করে ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছেন খাদ্য। কেউ কেউ আবেদন করে সহায়তা পাচ্ছেন না এমনটি বললেন অনেকে।
সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানী শহরে যারা বাস করছেন তারা কোনো না কোনোভাবে সহায়তা পাচ্ছেন। এ সহায়তা অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই। এমনটি ধারণা সহায়তা প্রদানকারী অনেকেরই।
দূতাবাস এ পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজারেরও অধিক বাংলাদেশি নাগরিকদের খাদ্য সহায়তা পৌছে দেয়া হচ্ছে। আর এ সহায়তা চলমান রয়েছে। একইভাবে অন্যদের নিকট পর্যায়ক্রমে খাদ্য সহায়তা পৌছেঁ দেওয়া হবে বলে জানালেন দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা।
রাজধানী শহর ছাড়া, মালাক্কা, জহুরবারু, পেনাং, তেরেঙ্গানু, কোয়ান্তান, ক্যামেরুন হাইল্যান্ডের পাহাড় জঙ্গলে অনেক প্রবাসী কাজ করছে তাদের খোঁজ কে রাখে? আবার অনেকে আছেন নাম দস্তখত জানে না, ফোন করতে হলে অন্য জনের সহায়তা নিতে হয় দেশে টাকা পাঠাতেও সহযোগিতা নিতে হয় অন্য জনের।
ওই সংখ্যাটা শুধু বুঝে কাজ আর মাস শেষে বাড়িতে টাকা পাঠানো। ওদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। ওরা না খেয়ে কোথায় কোথায় পড়ে রয়েছে তাদের খুঁজে বের করে সহায়তার অনুরোধ জানিয়েছেন সচেতন প্রবাসীরা।
এমআরএম