মালয়েশিয়ায় এমআরপি নিয়ে প্রবাসীদের ভোগান্তি
মালয়েশিয়াতে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) পেতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পোহাতে হচ্ছে নানান ভোগান্তি। অনিয়ম, ঘুষ, অবৈধ অর্থ লেনদেন আর অব্যবস্থাপনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রবাসীদের। তবে তা অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তারা।
সম্প্রতি মালয়েশিয়া সরকার বিভিন্ন ক্রাইটেরিয়ায় বিদেশিদের বৈধতা প্রদানের ঘোষণায় অবৈধ শ্রমিকরা নতুন পাসপোর্ট করতে ধর্ণা দিচ্ছেন দূতাবাসে। প্রথমে সরকারি ঘোষণায় বাংলাদেশিরা নিরব থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে পাসপোর্টের আবেদন জমা দিচ্ছেন।
১৮ মার্চ (শুক্রবার) সকাল ৯টা থেকে দূতাবাসে অপেক্ষমান শত শত আবেদনকারি লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। এদের আবেদন জমা নিতে রি-ইস্যু ও নতুন পাসপোর্ট দুটি লাইনে ভাগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে প্রবাসীদের সেবা দিতে ফিঙ্গারিংয়ের জন্য চারটি কম্পিউটারে কর্মকর্তারা ৯টা থেকে ৭টা পর্যন্ত কাজ করেও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। গত ১৪ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার নতুন পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, দূতাবাসের আশপাশে ওঁৎপেতে রয়েছে দালালরা। এক আবেদনকারি জানান, দালালের মাধ্যমে আবেদন ফরম পূরণ করেছেন। এ জন্য তার কাছ থেকে আড়াইশ রিঙ্গিত নিয়েছে। শুধু তাই নয়, দালালরা প্রবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৩৫ থেকে ৫০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত নিচ্ছে। যা বাংলাদেশি প্রায় ৮২০টাকা থেকে ১১৭৫টাকা।
আবেদনপত্র জমাদানের জন্য প্রত্যেক বাংলাদেশীকে গুণতে হচ্ছে ৫০ থেকে ২৫০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত। ভুল সংশোধনের ক্ষেত্রে ৩৫ থেকে ১৫০, ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য ১০ থেকে ২০, এমআরপি ডেলিভারির জন্য ২০ এবং অনলাইন ভিসার ক্ষেত্রে ৫০ রিঙ্গিত দিতে হচ্ছে। কোন সমস্যা ঝুলে গেলে তা সমাধানের জন্য গুণতে হয় আরো ৪০০ থেকে ৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত। অথচ এসব ক্ষেত্রে সরকারী ফি মাত্র ১৮ ডলার।
বর্তমানে বৈধ-অবৈধ মিলে প্রায় সাড়ে আট লাখ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় কর্মরত রয়েছেন। অথচ এদের মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট পেয়েছেন আড়াই লাখের কিছু বেশী। বাকিরা এখনও পুরাতন পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন।
এদিকে শ্রমিকদের হাতে দ্রুত পাসপোর্ট পৌঁছে দিতে হাইকমিশন সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি এমএসকে শাহীন। আবেদনের জন্য আগতদের একদিনের মধ্যেই জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট, ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ছবি তোলার কাজ সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে দূতাবাসেই, যাতে করে কেউ ফেরৎ না যায়।
তিনি আরো জানান, হাইকমিশন এক মাসের মধ্যেই গ্রাহকের হাতে নতুন পাসপোর্ট তুলে দেয়ার চেষ্টা করছে। নতুন পাসপোর্ট করতে ব্যাংক ড্রাফট ১১৬ রিঙ্গিত, রি-ইস্যু ১১৬ রিঙ্গিত, জন্মনিবন্ধন ২০ রিঙ্গিত এবং আ্যটাষ্টেশনে ২০ রিঙ্গিতের বিনিময়ে আবেদন জমা নেয়া হচ্ছে।
দালাল প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে এমএসকে শাহীন বলেন, আমরা সব সময় বলে আসছি তাদের সাথে কোন প্রকার লেনদেন না করতে। এর পরও যদি কেউ লেনদেন করে ধরা পড়ে তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হবে।
এমএমজেড/পিআর