ঈশরাত আপুকে বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল

প্রবাস ডেস্ক
প্রবাস ডেস্ক প্রবাস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৫০ এএম, ২৪ জুন ২০২৪

অমিয় দাশ, ফ্লোরিডা, যুক্তরাষ্ট্র

হাত নেড়ে, চোখ বুজে, মাথা ঝাঁকিয়ে বুঝালো, ‘আজ কিছু নেই পাঠানোর।’ আমি হ্যাঁ-সূচক ঘাড় নেড়ে ফুটবল খেলার মাঠের দিকে রওনা হলাম।

লোকমান ভাইদের বাড়ির সরু রাস্তা পার হয়ে ফুটবল মাঠে যেতে হয়। সরু রাস্তা পার হওয়ার আগেই মনে হলো যদিও আজকে কিছু দেওয়ার নেই, তথাপিও লোকমান ভাইকে ব্যাপারটা জানানো দরকার। তা না হলে হয়তো সে আমার আশায় বসে থাকবে।

অগত্যা বড় রাস্তা থেকে নেমে লোকমান ভাইদের বাড়িতে যাওয়ার সরু মাটির পথে হাঁটতে হাঁটতে লোকমান ভাইয়ের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালাম। আমাকে দেখেই টমী আস্তে আস্তে একটু কুঁই কুঁই করে ডেকে পাশে এসে দাঁড়িয়ে লেজ নাড়তে লাগলো।

তারপর টমী কাছে এসে আমার হাঁটুতে, পকেটের কাছে শুঁকে নিরুৎসাহীর মতো দাঁড়িয়ে লেজ নাড়ানো থামিয়ে, মাটিতে শুয়ে পড়ল। এরই মধ্যে লোকমান ভাই শার্টটা গায়ে চাপাতে চাপাতে তার সাইকেলটা ঠেলে হাঁটতে হাঁটতে আমার কাছে এলো।
আমার দিকে ইশারা করে বললো,

‘কই?’
‘আজ কিছু নেই’
‘নেই কেন? ওদের বাড়িতে যাস্ নি?‘

আগের পর্ব পড়ুন 

‘গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখলাম, একগাদা মেহমান এসেছে।’
লোকমান ভাই একটু চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
‘তাই?’

‘হ্যাঁ। ঈশরাত আপু আগামীকাল আমাকে যেতে বলেছে।’
‘ও আচ্ছা।’

বলেই কাগজে মোড়া কয়েকটা কদমা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে চিন্তিত মনে সাইকেল চালিয়ে বড় রাস্তার দিকে চলে গেলেন। কদমাগুলো হাতে ধরে খাব, কি খাবনা তা ভাবলাম কিছুক্ষণ।

আমি তো আজ পিয়নের কাজটা পরিপূর্ণভাবে করিনি। তাহলে কদমাগুলো কি আমার নেওয়া ঠিক হয়েছে? না, ঠিক হয়নি মনে হয়। কিন্তু কিছু বোঝার বা বলার আগেই তো লোকমান ভাই দ্রুতগতিতে চলে গেলেন।

আচ্ছা, আজ না হয় টমীর সাথে ভাগাভাগি করে খাই। কাল যদি লোকমান ভাই কদমা দিতে চান তাহলে না নিলেই হবে। একটা কদমা টমীর দিকে উঁচু করে ছুঁড়ে দিলাম। টমী ঠিক ক্যাচ ধরে মুখের মধ্যে নিয়ে চুপচুপ করে শব্দ করে চুষে চুষে তারপর মাটিতে ফেলে তা আবার চেটে চেটে খেতে লাগলো।

টমীকে বললাম, ‘যাহ, কিরে তুই? কদমা কামড়ে খা।’
বলেই আমার একটা কদমা কামড়ে ওকে দেখালাম যে কীভাবে কামড় দিয়ে খেতে হয়। কিসের কি? টমী কিছু বুঝলো বলে মনে হলো না! সে একইভাবে মুখের মধ্যে নিয়ে চুষে আবার মাটিতে ফেলে দিয়ে চেটে চেটে খেতে লাগলো।

ওখানে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে আমার খেলতে যেতে দেরি হবে। আমাকে ফুটবল মাঠে যেতে হবে। বললাম, ‘টমী, তোকে আমি অন্যদিন শিখিয়ে দেবো কীভাবে কদমা কামড়ে খেতে হয়।’

টমী কি বুঝলো জানি না, তবে আমার মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে একবার একটু তাকিয়ে, আবার কদমা চাটতে লাগলো। আমি চলে গেলাম খেলার মাঠে।

পরদিন কথামতো আমি ঈশরাত আপুর বাড়িতে গেলাম। ঈশরাত আপুকে দেখে খুব বিধ্বস্ত মনে হল। কাল থেকে মনে হয় চুল আচড়ায়নি। চুলগুলো যেদিকে খুশী সেদিকে এলোমেলো হয়ে আছে।

চলবে...

এমআরএম/জিকেএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]