ফিলিপাইনের ইফতারে থাকে জনপ্রিয় খাবার ‘কারি কারি’

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:১৭ এএম, ১৫ এপ্রিল ২০২৩

মহিমান্বিত মাস রমজান। এ মাসকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী রয়েছে নানা অনুষ্ঠান আর রীতি-রেওয়াজ। সারাদিন রোজা রেখে সন্ধ্যায় বাহারি ইফতার, ইফতারের পর তারাবিহের নামাজ পড়া ইত্যাদি ছাড়াও আনন্দ-উৎসব করার মাধ্যমেও সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয় রমজানের খুশির আমেজ। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের চেয়েও এসব রীতি সাংস্কৃতিক উদযাপন হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। মুসলিম সংখ্যালঘু দেশ ফিলিপাইন। তবু বিপুলসংখ্যক মুসলিম সে দেশে বাস করে। বিশেষত মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় মুসলিমদের বসবাস বেশি। ফিলিপাইনের মুসলিমরা কীভাবে রমজান পালন করেন?

রমজানের সংস্কৃতি ঐতিহ্য

ফিলিপাইনের অধিবাসীরা রমজানকে উদযাপন করে নিজস্ব সংস্কৃতি ও ইসলামি ঐতিহ্যের আলোকে। ফিলিপাইনে আরব ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ইসলামের প্রচার ও প্রসার হয়েছে। তাদের ইসলামি জীবনযাত্রা ও আখলাক দেখে ফিলিপাইনের আধিবাসীরা ইসলাম গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হয়। এমনকি সেখানে ইসলাম একসময় বিজয়ী ধর্মে পরিণত হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে পশ্চিমা অভিবাসীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। তারা স্পেনের রাজা দ্বিতীয় ফিলিপের নেতৃত্বে ১৫৬৮ সালে মুসলমানদের পরাজিত করে।

রমজানে ধর্মীয় অনুপ্রেরণা

রমজানকে ফিলিপাইনের মুসলিমরা ধর্মীয় অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করে। রমজান তাদের মধ্যে রীতিমতো উৎসবের সৃষ্টি করে। রমজানের শুরুতেই তারা মসজিদগুলোর সৌন্দর্য বর্ধনে আলোকসজ্জাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। রমজানে মসজিদগুলো পরিণত হয় সামাজিক মিলন কেন্দ্রে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ইবাদত ও ধর্মীয় শিক্ষার জন্য পরিবারের পুরুষ সদস্য ও শিশুরা মসজিদে একত্রিত হয়। রমজান মাসে প্রতিটি মসজিদে মাসব্যাপী ধর্মীয় পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়। মুসলিম পুরুষরা বেশির ভাগ সময় মসজিদে ইবাদতে কাটায়। শিশুরা ধর্মীয় পাঠ গ্রহণে মনোযোগী হয়।

সমাজসেবায় ইফতার-সেহরির ব্যবস্থা

ফিলিপাইনের মুসলমানরা রমজানে সমাজসেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগ করে। সমাজের অসহায়-দুস্থ মানুষের কল্যাণে তারা বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করে। যেমন—সামাজিকভাবেই ধনীরা দারিদ্র্যের জন্য ইফতার ও সেহরির ব্যবস্থা করে।

ইফতার আয়োজন

রমজান মাসের ইফতার ও সেহরিতে থাকে খাবারে বৈচিত্র্য। তাদের ইফতারের টেবিলে সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হলো ‘কারি কারি’ নামক ভুনা গোশত। এ ছাড়া মিষ্টান্ন, শরবত ও হরেক রকম ফল থাকে ইফতার আয়োজনে। ইফতারের পর ফিলিপিন শিশুরা ভালো পোশাকাদি পরিধান করে রাস্তায় বের হয়। উৎসবে মেতে ওঠে। তাদের হাতে থাকে রঙিন লণ্ঠন। দলবেঁধে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যায়। তারাবিহের নামাজ আদায় করে। সেহরির সময় একদল মানুষ সবাইকে জাগিয়ে দেয়। আনন্দ, উল্লাস ও ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রমজান উদযাপন করে তারা।

ফিতরা ও জাকাতের ব্যবস্থা

ফিতরা ও জাকাতের অর্থ মসজিদে জমা করা হয়। জাকাত-ফেতরার জন্য মসজিদে জমাকৃত টাকা ইমাম সাহেবের নেতৃত্বে তা দুস্থ মানুষের মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী বণ্টন করা হয়।

এমএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।