দুনিয়াবি ব্যাপারে অমুসলিমের কাছে দোয়া চাওয়া যাবে?

অমুসলিম বা কাফের ব্যক্তি আখেরাতে চিরজাহান্নামী হবে। তার কোনো দোয়া বা ভালো কাজ কজে আসবে না। আখেরাতের ব্যাপারে অমুসলিমের দোয়াও কবুল করা হয় না। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,
قَالُوۡۤا اَوَ لَمۡ تَکُ تَاۡتِیۡکُمۡ رُسُلُکُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ قَالُوۡا بَلٰی قَالُوۡا فَادۡعُوۡا وَ مَا دُعٰٓؤُا الۡکٰفِرِیۡنَ اِلَّا فِیۡ ضَلٰلٍ
তারা (জাহান্নামের ফেরেশতারা) বলবে, ‘তোমাদের কাছে কি সুস্পষ্ট প্রমাণাদিসহ রাসুলগণ আসেননি?’ জাহান্নামীরা বলবে, ‘হ্যাঁ অবশ্যই।’ দারোয়ানরা বলবে, ‘তবে তোমরাই দোয়া করো; কাফেরদের দোয়া নিষ্ফলই হয়।’ (সুরা গাফের: ৫০)
তবে এটা আখেরাতের ব্যাপারে প্রযোজ্য। দুনিয়াবি ব্যাপারে সবচেয়ে বড় অবিশ্বাসী ইবলিস শয়তানের প্রার্থনাও কবুল হয়েছে। তাই দুনিয়ার কল্যাণ অকল্যাণের ব্যাপারে কাফেরের দোয়া কবুল হতে পারে।
বিশেষত কাফের যদি মজলুম হয়, কোনো মুসলিম তার ওপর অন্যায় ও জুলুম করলে তার বিরুদ্ধেও কাফেরের দোয়া কবুল হতে পারে এবং মুসলিম ব্যক্তি তার জুলুমের শাস্তি দুনিয়ায়ই পেয়ে যেতে পারে।
কানজুল উম্মালে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, ‘কাফের যখন তার দুনিয়াবি প্রয়োজনে আল্লাহকে ডাকে, আল্লাহ তার প্রয়োজন পুরণ করে দেন। মুমিন আল্লাহকে ডাকলে তিনি ডাকে সাড়া দিতে দেরি করেন। ফেরেশতা আল্লাহ তায়ালাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে আল্লাহ বলেন, আমি অবিশ্বাসীর ডাকে দ্রুত সাড়া দিই যেন সে আমাকে আর না ডাকে, আমাকে স্মরণ না করে। আমি তার দোয়া অপছন্দ করি। তার স্বর অপছন্দ করি। মুমিনের ডাকে দেরিতে সাড়া দিই যেন সে আমাকে ডাকা বন্ধ না করে। আমাকে ডাকতে থাকে। আমি তাকে ভালোবাসি। তার অনুনয়-বিনয় পছন্দ করি।’
এ হাদিস থেকেও বোঝা যায় দুনিয়াবি ব্যাপারে কাফেরের দোয়া কবুল হতে পারে। তাই দুনিয়াবি ব্যাপারে অমুসলিমের কাছে দোয়া চাওয়া অনুত্তম হলেও অবৈধ নয়।
দুনিয়ার সুখ-সমৃদ্ধি বা সম্পদের কোনো মূল্য আল্লাহর কাছে নেই। দুনিয়ার সুখ সমৃদ্ধি তিনি মুসলমানদের দেন, কাফেরদেরও দেন। অনেক ক্ষেত্রে কাফেরদের বেশিও দেন। কাফের তার ভালো কাজের প্রতিদান দুনিয়াতেই পেয়ে যায়। রাসুল (সা.) বলেন, এই দুনিয়ার যদি আল্লাহর কাছে একটা মশার ডানা সমান মূল্যও থাকতো, তাহলে তিনি কোনো কাফেরকে এক ঢোক পানিও খেতে দিতেন না। (সুনানে তিরমিজি)
ওএফএফ/এমএস