কাজা নামাজ মসজিদে আদায় করা কি মাকরুহ?

অবহেলা ও গাফিলতির কারণে নামাজ কাজা করা গুনাহের কাজ। নিজের গুনাহ মানুষের সামনে প্রকাশ করা মাকরুহ। তাই প্রকাশ্যে সবার সামনে কাজা নামাজ আদায় করা মাকরুহ বা অপছন্দনীয়।
যে সময় মসজিদে কাজা নামাজ আদায় করলে মানুষ ধারণা করবে লোকটি কাজা নামাজ আদায় করছে, ওই সময় মসজিদে কাজা আদায় করা মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। যে সময় কাজা নামাজ আদায় করলে মানুষ বুঝতে পারবে না কাজা নাকি নফল নামাজ আদায় করা হচ্ছে, ওই সময় নামাজি চাইলে মসজিদে, নিজের ঘরে বা অন্য যে কোনো জায়গায় কাজা নামাজ আদায় করতে পারে। কাজা নামাজ মসজিদে আদায় করা জরুরি নয়।
রাসুল (সা.) মাঠেও কাজা নামাজ আদায় করেছেন। যেমন একটি প্রসিদ্ধ ঘটনা বর্ণিত রয়েছে যে, একবার নবিজি (সা.) সাহাবিদের নিয়ে একটি উপত্যকায় যাত্রাবিরতি করলেন। নবিজি (সা.) ও তার সাহাবিরা খুব ক্লান্ত ছিলেন, তারা ঘুমিয়ে পড়লেন। নামাজের সময় সবাইকে ডেকে তোলার দায়িত্ব ছিল হজরত বেলালের (রা.) ওপর। কিন্তু তিনিও অনিচ্ছকৃতভাবে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল হওয়ার পর সূর্যের কিরণ যখন নবিজির (সা.) ওপর পড়লো, তখন রাসুল (সা.) প্রথম জেগে উঠলেন। সবাইকে জাগিয়ে রাসুল (সা.) নির্দেশ দিলেন দ্রুত ওই উপত্যকা ছেড়ে আগে বাড়তে। কিছু দূর গিয়ে রাসুল (সা.) থামলেন। রাসুলের (সা.) নির্দেশে বেলাল একামত দিলেন এবং রাসুল (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে জামাতের সাথে ফজরের নামাজ আদায় করলেন।
দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়ায় বলা হয়েছে, দুররুল মুখতার কিতাবে আল্লামা শামী (রহ.) মসজিদে কাজা নামাজ আদায় করাকে মাকরুহ বলেছেন। কারণ নামাজ কাজা করা যেহেতু গুনাহের কাজ, তাই এই গুনাহ যথাসম্ভব গোপন রাখার চেষ্টা করা কর্তব্য। তবে মসজিদে কাজা নামাজ যদি এমন সময় পড়া হয়, যখন মানুষ নফল পড়ে এবং তাকে দেখে অন্যদের এই ধারণা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে যে সে কাজা নামাজ আদায় করছে, তাহলে মসজিদে কাজা আদায় করা মাকরুহ হবে না।
ওএফএফ/জেআইএম