সাগরে মরদেহ দাফন করার ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:১৪ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২৪

নৌযানে চড়ে সাগর পাড়ি দেওয়ার সময় গভীর সাগরে কেউ মারা গেলে যদি মরদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকে, মরদেহে পচন ধরে যাওয়ার আগে স্থলভূমিতে পৌঁছা সম্ভব হয়, তাহলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে অর্থাৎ মরদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে স্থলভূমিতে পৌঁছে যথা নিয়মে দাফন করতে হবে।

যদি মরদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকে এবং স্থলভূমিতে পৌঁছার আগে মরদেহে পচন ধরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে করণীয় হলো নৌযানেই তাকে যথা নিয়মে গোসল করিয়ে কাফন পরিয়ে জানাজার নামাজ পড়া। এরপর মরদেহ সাগরে ছেড়ে দেওয়া। এ ক্ষেত্রে সম্ভব হলে মরদেহের সাথে পাথর, লোহা বা এ রকম ভারী কোনো বস্তু বেঁধে দেওয়া যেতে পারে যেন মরদেহ সাগরের তলদেশে চলে যায়।

মৃত্যুর পর দ্রুত দাফনের নির্দেশ এসেছে হাদিসে

কেউ মৃত্যু বরণ করলে দ্রুত তার গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফনের কাজ যথাসম্ভব সম্পন্ন করা উচিত। হাদিসে এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

أَسْرِعُوا بِالْجِنَازَةِ فَإِنْ تَكُ صَالِحَةً فَخَيْرٌ تُقَدِّمُونَهَا ‏‏إِلَيْهِ‏‏ وَإِنْ يَكُ سِوَى ذَلِكَ فَشَرٌّ تَضَعُونَهُ عَنْ رِقَابِكُمْ
তোমরা মৃত ব্যাক্তিকে তাড়াতাড়ি দাফন করবে। যদি সে নেক ব্যক্তি হয়, তবে তাকে তোমরা তার কল্যানের নিকটবর্তী করে দিলে আর যদি অন্য কিছু হয় তবে মন্দকে তোমাদের কাঁধ থেকে সরিয়ে দিলে। (সহিহ বুখারি: ১৩১৫)

কারো মৃত্যুর পর তার নিকটাত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও পাড়া প্রতিবেশীদের মৃত্যুর সংবাদ জানানো মুস্তাহাব। এটাকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। যেন সবাই মৃতের জানাজা ও দাফনে শরিক হতে পারে। এক মুসলমানের ওপর আরেক মুসলমানের একটি হক হলো সে তার জানাজার নামাজ আদায় করবে, তাকে সমাহিত করবে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

حَقُّ المُسْلِم عَلَى المُسْلِم خَمْسٌ رَدُّ السَّلامِ وَعِيَادَةُ المَريض وَاتِّبَاعُ الجَنَائِزِ وَإجَابَةُ الدَّعْوَة وتَشْميتُ العَاطِسِ
এক মুসলিমের ওপর অপর মুসলিমের হক পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া, তার জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং তার হাঁচির জবাব দেওয়া। (সহিহ বুখারি: ১২৪০, সহিহ মুসলিম: ২১৬২)

কিন্তু কোনো আত্মীয় যদি দূরদেশে থাকে, তার আসতে অনেক দেরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে তাকে দেখানো বা জানাজায় তার উপস্থিতির জন্য দীর্ঘ সময় জানাজা ও দাফনে দেরি করা অনুচিত। আমাদের সমাজে আত্মীয় স্বজনের অপেক্ষায় কয়েকদিন দেরি করারও প্রচলন আছে যা কোনোভাবেই শরীয়তসম্মত নয়।

ওএফএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।