যে দোয়ার মাধ্যমে ক্ষমা পেয়েছেন আদম (আ.)

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৫৩ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আল্লাহ তাআলা আদম-হাওয়াকে একটি গাছের কাছে যেতে নিষেধ করেন

মানবজাতির আদি পিতা প্রথম মানুষ হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করে আল্লাহ তাআলা তাকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেন। সব ফেরেশতাদের নির্দেশ দেন তাকে সম্মানসূচক সিজদা করতে। সব ফেরেশতারা আল্লাহর নির্দেশের আনুগত্য করে আদমকে (আ.) সিজদা করে। কিন্তু শয়তান আল্লাহর নির্দেশ পালন করতে অস্বীকার করে বলে, আমি আদমের চেয়ে শ্রেষ্ঠ, আপনি আমাকে আগুন দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, আদমকে সৃষ্টি করেছেন মাটি দিয়ে। ফলে শয়তানকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়। কোরআনে এই ঘটনা বর্ণনা করে আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি, এরপর আকার-অবয়ব, তৈরী করেছি। তারপর আমি ফেরেশতাদের বলেছি-আদমকে সিজদা করো। তখন সবাই সিজদা করেছে, কিন্তু ইবলিস সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না। আল্লাহ বললেন, আমি যখন নির্দেশ দিয়েছি, তখন কিসে তোমাকে সিজদা করতে বারণ করল? সে বলল, আমি তার চাইতে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা। আল্লাহ বললেন, তুমি এখান থেকে নেমে যাও। এখানে অহংকার করার কোনো অধিকার তোমার নাই। তাই বের হয়ে যাও। নিশ্চই হীনতমদের মাঝেই তোমার স্থান। (সুরা আরাফ: ১১-১৩)

বিতাড়িত ও লাঞ্ছিত হয়ে শয়তান আদমকে (আ.) আল্লাহর রহমত ও সন্তুষ্টি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার উপায় খুঁজতে থাকে। আল্লাহ তাআলা আদম (আ.) ও তার স্ত্রী হাওয়াকে (আ.) পুরো জান্নাতে ঘুরে বেড়ানোর এবং সব ধরনের ফলফলাদি খাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। শুধু একটি গাছের গাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন। শয়তান আদম-হাওয়াকে ওই গাছের ফল খাওয়ার কুমন্ত্রণা দেয়। সে তাদের বোঝায় ওই গাছের ফল খেলে তারা ফেরেশতা ও চিরজান্নাতি হয়ে যাবে। সে কসম করে বলে, তাদের কল্যাণকামনা থেকেই সে এই পরামর্শ দিচ্ছে।

আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) ধোঁকায় পড়ে যান এবং ওই ফল খান। ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর অসন্তুষ্ট হন, তাদেরকে দুনিয়ায় নামিয়ে দেন। কিন্তু শয়তানের মতো তারা চিরবিতাড়িত হননি। শয়তানের সাথে তাদের পার্থক্য ছিল শয়তান ভুল করার পরও লজ্জিত হয়নি বরং অহংকার করে এবং নিজের ভুলের পক্ষে যুক্তি দেখায়। আদম-হাওয়া শয়তানের মতো অহংকার করেননি। বরং লজ্জিত ও অনুতপ্ত হন এবং আল্লাহর কাছে এই দোয়ার মাধ্যেমে ক্ষমা প্রার্থনা করেন,

رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ

হে আমাদের পালনকর্তা আমরা নিজেদের প্রতি জুলম করেছি। যদি আপনি আমাদের ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব। (সুরা আরাফ: ২৩)

এই দোয়াটি আল্লাহই তাদের অন্তরে ঢেলে দিয়েছিলেন যেন তারা এর মাধ্যমে ক্ষমা পেতে পারেন। সুরা বাকারায় আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি আদমকে হুকুম করলাম যে, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং ওখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তিসহ খেতে থাক, কিন্তু এ গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। অন্যথায় তোমরা জালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়বে। অনন্তর শয়তান তাদের উভয়কে ওখান থেকে পদস্খলিত করেছিল। পরে তারা যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে দিল এবং আমি বললাম, ‘তোমরা নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্রু। আর তোমাদের জন্য যমীনে রয়েছে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবাস ও ভোগ-উপকরণ। তারপর আদম তার রবের পক্ষ থেকে কিছু বাণী পেল, ফলে আল্লাহ তার তওবা কবূল করলেন। নিশ্চয় তিনি তওবা কবুলকারী, অতি দয়ালু। (সুরা বাকারা: ৩৪-৩৭)

ওএফএফ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।