ধান কিনতে পারছেন না উত্তরাঞ্চলের ফড়িয়ারা

ফজলুল হক শাওন
ফজলুল হক শাওন ফজলুল হক শাওন , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:২০ পিএম, ০৮ এপ্রিল ২০২০

ধান কিনতে পারছে না উত্তরাঞ্চলের ফড়িয়ারা। হাট-বাজার না বসার কারণে হাটেও ধান উঠছে না। আবার বাড়ি বাড়ি ঘুরেও ধান পাচ্ছেন না তারা। ফলে ফড়িয়াদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার পথে।

ফড়িয়াদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এমনিতেই আমন ধানের মৌসুম প্রায় শেষ। অনেক গৃহস্থের ঘরে এখন ধান নেই। বড় গৃহস্থদের ঘরে ধান থাকলেও তারা এবং মজুতদাররা বাজার আরও বাড়ে কিনা সেটা দেখার অপেক্ষায় আছেন। ফলে ফড়িয়াদের এখন কোনো ব্যবসা নেই।

উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশেই ফড়িয়ারা ধান কিনে বড় বড় মহাজনের কাছে বিক্রি করে। কেউ কেউ ধান সেদ্ধর পর চাল করে বিক্রি করেন। এখন করোনার কারণে কোনো এলাকায়ই হাট বসছে না। যারা শত শত মণ ধান মজুত করে রেখেছে তারা সরাসরি মিল মালিকদের কাছে ধান বিক্রি করছে। মিল মালিকদের সঙ্গে দরদাম মিটলে রাতে ট্রাক চলে যায় এবং লোড হয়ে আবার গন্তব্যে পৌঁছে। ফলে ফড়িয়াদের আর কোনো প্রয়োজন হচ্ছে না।

বগুড়ার ধুনট উপজেলার চরপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী মজিবর রহমান। তিনি বাজার ও গ্রাম থেকে ধান কিনে চাল বানিয়ে বিক্রি করেন। প্রায় ৩০ বছর উনি এভাবেই সংসার পরিচালনা করে আসছেন। ছোট এই ব্যবসায়ী এখন স্রেফ ঘরে বসে চালান ভেঙে খাচ্ছেন। হাট বাজার বন্ধ থাকলেও পাড়ায় পাড়ায় ঘুরছেন ধান কেনার জন্য। কিন্তু ধান পাচ্ছে না। ফলে তার ব্যবসার চাকাও ঘুরছে না।

মজিবর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে কোনো ব্যবসা নেই। হাট-বাজার বসছে না, যান বাহন চলছে না। আবার গ্রামে গ্রামে ঘুরেও ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বসে থেকেই দিন কাটছে। এছাড়া মানুষ আতংকের মধ্যে আছে করোনাভাইরাস নিয়ে। এ সুযোগে চালের দামও কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে। ৩২ টাকা কেজির গুটি স্বর্ণা ৩৮ টাকা, ৩৬ টাকার স্বর্ণা-৫ এখন ৪২-৪৩ টাকা, ৪০ টাকার চাল এখন ৪৫-৪৬ টাকা এবং ৪৮ টাকার কেজির কাটারি ভোগ এখন ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বগুড়ার শেরপুরের মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ জাগো নিউজকে বলেন, এখন মৌসুমের শেষ সময়। গৃহস্থদের কাছে ধান নেই। মজুতদার মহাজনদের কাছে যে ধান আছে তা হাটে বাজারে বিক্রি হচ্ছে না। এগুলো সরাসরি মিল মালিকদের সঙ্গে দরদাম মিটলে ট্রাক লোড হচ্ছে। এছাড়া এখন তো হাট-বাজার বন্ধ।

তিনি আরও বলেন, দু-তিন সপ্তাহের মধ্যেই নতুন ধান কাটা শুরু হবে। বাজারে নতুন ধান এলেই ধানের দাম অনেকটা কমে যাবে।

এফএইচএস/এএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।