একাই লড়লেন নিহাদ
গুলশানকে হারিয়ে কক্ষপথেই আবাহনী

রোববারের পড়ন্ত বিকেলে শেরে বাংলার প্রায় ফাঁকা মাঠে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের এক তরুণ; নিহাদউজ্জামান। সেকি কথা! নিহাদউজ্জামান আবার ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন কি করে? তিনি তো বোলার? মেলাতে কষ্ট হওয়ারই কথা।
নিহাদউজ্জামানই ব্যাট হাতে ম্যাচের শেষ ভাগে এসে আবাহনীর বোলার ও ফিল্ডারদের নাভিশ্বাস তুলে ছাড়লেন। তিনি নিজে মূলতঃ বাঁ-হাতি স্পিনার। এবারের লিগে আগের ১০ ইনিংসে- ৩৫*, ১৯, ০, ২, ৯, ৫, ১৪, ২*। ২ বার ব্যাট করেননি। বাকি ৮ ইনিংসে সাকল্যে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ৮৬ রান।
আর আজ মিরপুরে হোম অব ক্রিকেটে আবাহনীর বিপক্ষে ৮ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করতে না পারলেও ১১২.৩৩ স্ট্রাইকরেটে ৭৩ বলে ৮২ রানের হার না মানা ইনিংস উপহার দিয়েছেন নিহাদউজ্জামান।
ভাববেন না, তাতে তার দল গুলশান জিতে গেছে। শেষ হাসি হাসলো আবাহনীই। আকাশী-হলুদরা পেয়েছে ৫০ রানের বড় জয়। যে জয়ে আবাহনী থেকে গেল শিরোপা জয়ের কক্ষপথেই। রাউন্ড রবিন ও সুপার লিগ মিলিয়ে ১৩ খেলায় ১১ জয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে থাকলো তারা।
তবে ম্যাচের শেষ অংশের আলোচিত পারফরমার নিহাদ। কারণ, তার ওই ঝড়ের বেগে গড়ে তোলা ইনিংসেই খেলাটি শেষ বল পর্যন্ত গড়িয়েছে। না হয় হয়ত অনেক আগেই ম্যাচ শেষ হয়ে যেত। আবাহনী জিততো অনেক বড় ব্যবধানে। আবাহনীর সব উইকেটে করা ২৭৮ রানের জবাবে এক সময় ১৬২ রানেই ৯ উইকেট হারিয়ে বসেছিল গুলশান।
সেই চাপের মুখে নিহাদউজ্জামান আর শেষ ব্যাটার রায়ান আলী একরাম মিলে দশম উইকেটে ৬৬ রান জুড়ে দিলে ২০০ টপকে যায় গুলশান। আর তাতেই ব্যবধান কমে পঞ্চাশে নেমে আসে। না হয় খেলার যা চালচিত্র ছিল, তাতে আবাহনী জিততে পারতো ১০০ রান বা তার বেশি ব্যবধানে।
নিহাদউজ্জামান ৭৩ বলে ৫ ছক্কা আর অর্ধডজন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ওই ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ৮২ রানে।
এর আগে প্রথম সেশনে বাঁ-হাতি ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের (৭০ বলে ৮৩) আর মোহাম্মদ মিঠুনের (৭০ বলে ৪৫) ব্যাটিং দৃঢ়তায় আবাহনী পায় ২৭৮ রানের লড়াকু পুঁজি।
আবাহনী: ২৭৮/১০, ৪৯.৫ ওভার (শাহরিয়ার কমল ২, পারভেজ ইমন ৮৩, জিসান আলম ২৬, মোহাম্মদ মিঠুন ৪৫, মেহরুব হোসেন ১৬, মোসাদ্দেক হোসেন ২০, শামসুল ইসলাম অনিক ১৪, মাহফুজুর রাব্বি ২২, মৃত্যুঞ্জয় ২৬, এনামুল ১, রাকিবুল হাসান ১ নট আউট ১, অতিরিক্ত ১৭, ফরহাদ রেজা ৩/৩৯, রায়ান আলী খান ৩/৪৩, নিহাদউজ্জামান ২/৩২)।
গুলশান ক্রিকেট ক্লাব: ২২৮/১০, ৫০ ওভার (আলিফ হাসান ইমন ১, ইলিয়াস সানি ৫, সাকিব শাহরিয়ার ৪২, খালিদ হাসান ০, নাইম ইসলাম ১, সাহাদাত হোসেন সবুজ ৩৫, মেহেদি হাসান ২৫, নিহাদউজ্জামান নট আউট ৮২ , ফরহাদ রেজা ১৭ , আসাদুজ্জামান পায়েল ৪, রায়ান আলী ইকরাম ৫, অতিরিক্ত ১১, রাকিবুল হাসান ২/১৭, মেহরুব ২/১৩, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ২/৪৫, মাহফুজুর রাব্বি ২/৫৯, এনামুল ১/৪৩, মৃত্যুঞ্জয় ১/৪৭)গ
ফলঃ আবাহনী ৫০ রানে জয়ী।
এআরবি/আইএইচএস