মিরপুরের একাডেমি মাঠেই যখন করোনা সংক্রমণের শঙ্কা
বলা হচ্ছে, ক্লাব ক্রিকেটের সেই সোনালী দিন আর নেই। এখন আর মোহামেডান-আবাহনীর ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে ১০-১২ হাজার দর্শক ছুটে আসে না। হোম অব ক্রিকেট শেরে বাংলায় ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে সাকুল্যে কয়েকশ ক্রিকেট অনুরাগির দেখা মেলে।
ভাবা হচ্ছে, ঐ শ’খানেক বা শ’দুয়েক দর্শকের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা কম। আর ২৫ হাজার দর্শকের বিশাল শেরে বাংলায় এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসলে শ’দুয়েক দর্শকের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব থাকবে অনেক। এটুকু মানা গেল।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, শেরে বাংলায় বিসিবির একাডেমি মাঠে প্রিমিয়ার লিগের অনুশীলনের জন্য সকাল থেকে পড়ন্ত বিকেল পর্যন্ত সারাদিন গড়পড়তা দেড়শ থেকে দুইশ ক্রিকেটার, কোচ, কোচিং স্টাফ, ক্লাব অফিসিয়ালস থাকেন- সেখানে কি স্বাস্থ্যঝুঁকির কোনো সম্ভাবনা নেই।
একসঙ্গে চার থেকে ছয়টি ক্লাব অনুশীলন করছে। প্রতি দলে অন্তত ১৬ জন ক্রিকেটার। সঙ্গে আবার হেড কোচ, ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং কোচ, ম্যানেজার, ফিজিও, ট্রেইনার আর ক্লাব বয় মিলে আরও অন্তত সাত-আটজন, অর্থাৎ প্রায় ২৫ জন। ছয় ক্লাব ধরলে সংখ্যাটা ১৫০, আর চার ক্লাব ধরে যোগ করলে ১০০। সঙ্গে আবার অর্ধশতাধিক সাংবাদিক।
গত দুদিন বিশেষ করে আজ (শনিবার) সকাল সাড়ে নয়টা থেকে একটানা বিকেল পাঁচটা অবধি বিসিবি একাডেমি মাঠে একসঙ্গে এই এতগুলো মানুষ ছিলেন গাঁদাগাঁদি করে। এই অবস্থায় এক মাঠে এক সময়ে চার-পাঁচ দলের অনুশীলনএকসঙ্গে। ভাবা যায়!
বর্তমানে যেখানে করোনাভাইরাস চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে, সেখানে বিসিবি একাডেমি মাঠে প্রিমিয়ার লিগের এতগুলো দলের দেড়শ থেকে দু’শো ক্রিকেটার, কোচ, কর্মকর্তা ও বয়দের উপস্থিতি কতটা নিরাপদ?
খুঁতখুঁতে কিংবা সমালোচক হওয়ার দরকার নেই। যে কেউ বিশেষ করে যারা একটু বেশি সমাজ ও স্বাস্থ্য সচেতন তারা ঠিকই প্রশ্ন তুলছেন। তাদের কথা, বর্তমান প্রেক্ষাপটে একসঙ্গে এতগুলো দলের অনুশীলন করা কি ঠিক হচ্ছে? এতে করে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ছে না?
মাঠে খেলার সময় হাত মেলানো আর হাই ফাইভ করা মানা। তামিম, মুশফিকসহ অনেক তারকা ও সিনিয়র ক্রিকেটার এখনই তা মেনে হ্যান্ডশেকের বদলে হাত মুঠো করে কিংবা কনুই দিয়ে অন্যের কনুই স্পর্শ করছেন। কিন্তু অনুশীলনে সবাই সবার খুব কাছাকাছি।
এতগুলো দল যখন ঠাসাঠাসি করে একসঙ্গে অনুশীলনে তখন হাঁচি-কাশি ও শ্বাসপ্রশ্বাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি যে আরও অনেক বেশি। সেদিকে কি কারো নজর আছে?
মাঠে দর্শক কম আসাই কি শেষ কথা? ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ আর কর্তব্যরত সাংবাদিকদেরও তো করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। একাডেমি মাঠের মত ১৫০ থেকে ২০০ গজ জায়গায় দুইশ মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা একসঙ্গে থাকাই তো বড় চিন্তার কারণ। সেদিকে কি কারো নজর আছে?
এআরবি/এসএএস/জেআইএম